১৬ ডায়ালাইসিস মেশিনের ৭টিই নষ্ট, বিপাকে কিডনি রোগীরা
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিপাকে পড়ছেন কিডনি রোগীরা। হাসপাতালে কিডনি রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ডায়ালাইসিস বিভাগ থাকলেও নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, নেই যথাযথ ওষুধ সরবরাহ। এমনকি এখানে বাইরে থেকে রোগীরা সিরিঞ্জ কিনে দেওয়ার পর সেটা দিয়ে তাদের চিকিৎসা চলে।
হাসপাতালের ডায়ালাইসিস বিভাগে কিডনি রোগী ভর্তির পর বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বজনদের। তাদের অভিযোগ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও এখানে কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই। তাই বাইরে থেকে রোগীর স্বজনরা ওষুধ কিনে দিলে সেটা দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের এই বেহাল দশা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগে ১৬টি ডায়ালাইসিস মেশিন থাকলেও এর মধ্যে ৭টি বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে তিন ঘণ্টা। যার ফলে নতুন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কিডনি রোগীরা।
বিজ্ঞাপন
সজল হোসেন নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, আমরা জানি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়। তবে এখানে এসে কি চিকিৎসা পাচ্ছি? বাইরে থেকে ওষুধপত্র কিনে এনে দিলে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। একটা সিরিঞ্জও নেই এখানে। বাইরে থেকে সিরিঞ্জ কিনে দিলে নার্সরা সেটা ব্যবহার করছেন।
আজিজুল রহমান নামে অপর রোগীর স্বজন জানান, রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস করার কথা থাকলেও করছে তিন ঘণ্টা। এখানে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে পরীক্ষা করে আনলে সেটা দেখে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। মেডিকেলের এমন বেহাল দশা নানাভাবে ভোগান্তিতে ফেলছে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের।
বিজ্ঞাপন
আকলিমা বেগম নামে এক রোগীর স্বজন জানান, অধিকাংশ ডায়ালাইসিস মেশিন নষ্ট। এজন্য রোগীদের অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া নতুন রোগীদের ক্ষেত্রে ভোগান্তি বেড়ে যায়। এখানে কিডনি রোগীদের ক্যান নেই, পার্শ্ববর্তী ফার্মেসিতে টাকা জমা দিলে সেখান থেকে ক্যান সরবরাহ করছে। তারপর সেটা দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন নার্সরা।
এদিকে ডায়ালাইসিস ইউনিটের নানাবিধ সংকটের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও সেবিকারা।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরী জানান, বাজেট পেলে ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে বিকল হওয়া মেশিনগুলো মেরামত করা হবে। তবে সেক্ষেত্রে সময় লাগবে।
সোহাগ হোসেন/আরএআর/আরকে