বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। পুরস্কার বিতরণের আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নিজের প্রতিভার জানান দিতে, গান, কবিতা, ছড়াপাঠসহ বিভিন্ন অভিনয় করে। ঠিক ওই সময় মঞ্চ থেকে মাইক হাতে নেমে পড়েন প্রধান অতিথি। ভিক্ষার থালা হাতে পা কুঁজো করে হেঁটে হেঁটে ভিক্ষা করতে করতে করলেন ভিক্ষুকের অভিনয়। ওই সময় অভিনয়ে মুগ্ধ হন উপস্থিত শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিরা। এমনই এক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। 

সোমবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে ভিডিওটি ভাইরাল হতে থাকে। তাতে প্রচুর মানুষের রিয়েক্ট, শেয়ার এবং কমেন্ট লক্ষ্য করা গেছে। 

ঘটনাটি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা ইউনিয়নের আড্ডা উমেদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের। ভিক্ষুকের অভিনয় করে ভাইরাল হওয়া জাকির হোসেন বাদল ১২নং আড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। 

স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার (১৮ মার্চ) আড্ডা উমেদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন আড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাদল। 

১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাদল মাইক হাতে মাঠে, তাকে ঘিরে উৎসুক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। ভিডিওর শুরুতে তিনি বলে ওঠেন, আমি একটু ফকিরের অভিনয় করবো, টাকা একটু হাতে নিস রে বাবা। বলার সাথে সাথে হৈ হুল্লোড় শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় মঞ্চের টেবিলে রাখা একটি থালা এগিয়ে দেন একজন। ওই থালা হাতে নিয়ে পা কুঁজো করে প্রতিবন্ধী ফকিরের মতো মাইকে বলতে থাকেন, দেখি আমাদের এলাকার মহিলা শিক্ষকরা ফকিরকে কেমন ভালোবাসে বলেই তিনি পা কুঁজো করে' আমার আল্লা নবীজির নাম, আমার আল্লা নবীজির নাম, যেই বা লোকে, যেই বা জনে, যেই বা করে দান, আমার আল্লাহ নবীজির নাম...।

১মিনিট ৪৪ সেকেন্ড ধরে তিনি এমন করে অভিনয় করেন। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং উপস্থিত অভিভাবকরা ওই সময় ভিক্ষার থালায় টাকা দিতে থাকেন। এসময় কেউ একজন সেই ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে ভিডিওটি বেশ কয়েকটি আইডি থেকে শেয়ার করা হলে সোমবার সকাল থেকে ব্যাপক ভাইরাল হতে থাকে। 

এ বিষয়ে ভাইরাল চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাদল ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়নের মানুষের সাহায্য সহযোগিতার পাশাপাশি বিনোদন দিতে পারাটাও একটা সফলতা। আমি সেদিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম অনুষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে আমার মনে হলো, আমি একটু বিনোদন দেই, পরে মঞ্চ থেকে নেমে কানা ফকিরের অভিনয় করি। শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা সবাই খুব খুশি হয়েছে। তবে আমি পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে গেলে পোশাক যদি ছেঁড়া হতো, তাহলে অভিনয়টা আরও সুন্দর হতো। 

আরিফ আজগর/এমএএস