পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের বুইচাকাঠী গ্রামের যুবক মো. সামাদ শেখ। পেশায় একজন ভ্যানচালক। নিজের কোনো ঘর বা জমি ছিল না। অত্যন্ত কষ্টে অন্যের ঘরে স্ত্রী আঁখি বেগমকে নিয়ে (২০) ভাড়া থাকতেন। সইতে হত নানা অপমান। কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই যুবক এখন স্বাবলম্বী।

সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। বলছিলেন জীবনের পরিবর্তনের গল্প।

উপকারভোগী সামাদ শেখ বলেন, ‘এখন আর অন্যের ঘরে থাকতে হয় না। নিজের একখান ঘর হইছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। তিনি আমারে একখান ঘর দিছেন। এখন নিজের ঘরে থাকি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোনো জমি বা গৃহ না থাকায় স্ত্রীকে নিয়ে অন্যের ঘরে থাকছি। তাই বিভিন্ন সময় ঘর মালিকের অনেক কটু কথা শুনেও সহ্য করতে হত। আমারে ঘর পৌঁছাইয়া দিছে ইউএনও। আজ দোকানদারির বছর ঘুরতেই আমরা আগের থেকে অনেক ভালো আছি।’ 

সামাদের স্ত্রী আঁখি বেগম বলেন, আমরা গত বছর ভূমিহীন-গৃহহীনদের নামে বরাদ্দকৃত একটি সরকারি ঘর পেয়েছি। সেখানে বসবাসের পাশাপাশি একটি ছোট মুদি দোকান দিই। দোকান আমি পরিচালনা করি। পাশে থাকা কিছু পতিত জমিতে আমার স্বামী সবজি চাষ করে, পাশাপাশি ভ্যান চালায়। স্থানীয় বাজারে সেই সবজি বিক্রি করে। আমার কিছু মুরগিও আছে।

নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. সঞ্জীব দাশ জানান, সামাদ দম্পতি অনেক অসহায় অবস্থায় ছিলেন। তাদেরকে সরকারি ঘর দেওয়া হয়েছে। তারা আগে যেখানে ভাড়া থাকতেন সেখানে তাদের আয়ের বড় একটা অংশ চলে যেত। বর্তমানে তারা পরিশ্রমের মাধ্যমে দোকান দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন, আয়ের পথ হয়েছে। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে তাদেরকে কৃষি উপকরণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে কৃষিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। পারিবারিক পুষ্টি-বাগানের অধীনে তারা বিভিন্ন সবজি চাষ করছে। তারা বর্তমানে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন এবং জায়গাসহ একটি বাড়ির মালিক হয়েছেন।

উল্লেখ্য, আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ পর্যায়ে গৃহ হস্তান্তর কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন। সেদিন পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় ৩১০টি, নেছারাবাদ উপজেলায় ১০০টি, কাউখালী উপজেলায় ১০০টি, পিরোজপুর সদর উপজেলায় ১৩৩টি, ইন্দুরকানী উপজেলায় ৭৪টি, ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় ১৬৬টি, মঠবাড়িয়া উপজেলায় ২৭৭টি ঘরসহ মোট ১ হাজার ১৬০টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাবে। এর আগে ৫ হাজার ৭৯০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ৪ হাজার ১১৬টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে।

আবীর হাসান/এমজেইউ