তাকবীর হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভা

বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত তাকবীর ইসলাম খানের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। তাকবীর হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে শহরের টেম্পল সড়কে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায়। 

গত ১১ মার্চ শহরের জিলা স্কুলের পাশে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবীর ইসলাম খান। পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পাঁচদিন পর মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বিকেলে হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়।  

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাসের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।

মজিবর রহমান মজনু বলেন, ছাত্রলীগ নেতা তাকবীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাকবীর হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ছিল তাকবীর ইসলাম খান। তাকবীর সব সময় ছাত্রলীগের আদর্শ বুকে নিয়ে রাজপথে জননেত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে চলেছে। সে কখনও আদর্শ বিচ্যুত হয়নি। তাকবীর হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে কেউ আর কোনো দিন কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে সাহস না পায়। আমরা তাকবীরের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, তাকবীরের নামে কোনো অভিযোগ নেই। সেই তাকবীরের অকাল মৃত্যু হয়েছে। যা কারও কাছে কাম্য নয়। তাকবীরের মায়ের কোল খালি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো মায়ের কোল খালি না হয়। তাকবীর হত্যার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। 

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায়ের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবাদ সভায় তাকবীরের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
 
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা তাকবীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আল আমিন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে কাহালু উপজেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতার আল আমিন 

গ্রেফতার আল আমিন কাহালু উপজেলার বাসিন্দা। তার বাবার নাম আক্কাসী আলী। তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সম্মান শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

পুলিশ জানায়, তাকবীরের মা আফরোজা ইসলামের করা মামলার প্রধান আসামি আব্দুর রউফের সহযোগী  আল আমিন। এ হত্যাকাণ্ডের পর আব্দুর রউফকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাকবীরের মা আফরোজা ইসলামের করা মামলায় আল আমিনের নাম নেই। তাকে সিসি ক্যামেরায় ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করা হয়েছে। শহরের সাতমাথা এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আল আমিনকে চাপাতি হাতে তাকবীরের ওপর হামলা করতে দেখা গেছে।  

বগুড়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন হত্যাকাণ্ডে সম্পৃত্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হবে। 

সাখাওয়াত হোসেন জনি/আরএআর