জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ব্যয় ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পরিদর্শক তৈমুর ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে দুদক খুলনার উপ-পরিচালক মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

দুদক খুলনার উপ-পরিচালক মো. শাওন মিয়া ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, তৈমুর ইসলাম তার চাকরি জীবনে ৭৭ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৬ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। যা তিনি অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। এর মধ্যে ২০০২ সালে ডিএমপিতে চাকরি করার সময় সাময়িক বরখাস্ত হন। ওই সময়ে তিনি অ্যাপার্টমেন্ট ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট নামক কোম্পানিতে চাকরি করেন। পরে তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করে চাকরি ফিরে পান। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি পুনরায় তিনি ডিএমপিতে যোগদান করেন। এবং ২০১৩ সালে পুলিশ পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালে তিনি তার স্ত্রীকে ৬৫ লাখ টাকা দিয়েছেন।

তার বাবার নামে খুলনার টুটপাড়া এলাকায় ৩৭ শতক জমি ক্রয় করে ৪ তলা বাড়ি নির্মাণ করেন। সেই জমি থেকে ১৩ শতক জমি ও একটি ফ্ল্যাট তার বাবা তাকে দান করেছেন। যেগুলোর মূল্য তৈমুর ইসলাম নিজেই পরিশোধ করেছেন। এসব জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ও তথ্য গোপন করার উদ্দেশ্যেই তিনি এগুলো দান হিসেবে দেখিয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

ডুমুরিয়ায় ৬২ শতক জমি ক্রয় করে একটি দোতলা ভবন তৈরি করেছেন। সম্পদ বিবরণীতে ১২ লাখ টাকা ব্যয় দেখালেও আয়কর নথিতে ২০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। ২০১১ সালে ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি টয়োটা এলিয়ন গাড়ি ক্রয় করেন। যা রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয়ের অর্থ আয়কর নথিতে দেখাননি। এটিও অবৈধ আয় বলে ধরা হয়। আয়কর নথি পর্যালোচনায় তার ৫১ লাখ ৪২ হাজার ৫৩০ টাকা আয়ের থেকে ব্যয় বেশি পাওয়া যায়। এ টাকাও তার অবৈধ আয় হিসেবে ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে ২০১১ থেকে ২০১২ সালে দুইবার থাইল্যান্ড ভ্রমণে ৫ লাখ ১০ হাজার ৪৪৬ টাকা ব্যয় করেছেন তিনি। যা তিনি সুদসহ পরিশোধ করেন। এই খরচের হিসাব বা আয়ের উৎস তিনি আয়কর নথিতে দেখাননি।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) পুলিশ পরিদর্শক তৈমুর ইসলামের বিরুদ্ধে ৭৭ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৬ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ব্যয় ও অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদকে স্থানান্তর, হস্তান্তর, রূপান্তর করার দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় মামলা দায়ের করে।

মোহাম্মদ মিলন/এমআইএইচ