সুভ্রদেব সিং

কোমরে পিস্তল গুঁজে ফেসবুকে ছবি দেওয়া ছাত্রলীগ নেতা সুভ্রদেব সিংকে (২৫) ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। তার কোমরে গুঁজে রাখা পিস্তলটি আসল না নকল সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

সুভ্রদেব সিং বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বোয়ালমারী পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে দক্ষিণ কামারগ্রাম মহল্লার ঋষিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা।

গতকাল শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে একটি নীল রঙের একটি জামা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত আইডিতে একটি ছবি প্রকাশ করেন সুভ্রদেব সিং। ছবিতে তাকে পেছনের দিক থেকে দেখা যাচ্ছিল এবং ডান কোমরে একটি কালো রঙের পিস্তল সদৃশ্য বস্তু গোঁজা ছিল। ছবিতে তার মুখ ছিল সামনের দিকে। ছবির ক্যাপশনে এই ছাত্রলীগ নেতা লেখেন- ‘দেবেন যা পাবেন তা, ভাবনা চিন্তা কল্পনাহীন।’ এ পোস্টটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে পরে তিনি পোস্টটি  তার ফেসবুক আইডি থেকে মুছে ফেলেন।

এ বিষয়ে সুভ্রদেব সিং জানান, বোয়ালমারীর কাটাগড় এলাকার একটি মেলা থেকে তিনি এই খেলনা পিস্তলটি  কিনেন তার ভাতিজার জন্য। শখের বশে তিনি সেটি কোমরে গুঁজে ওই ছবি পোস্ট করেছিলেন। এরপর নানান জন কমেন্ট করেন। 

তিনি বলেন, আসলে এটা আমার ঠিক হয়নি। ভুল হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় পোস্টটি মুছে ফেলেছি। 

উপজেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, সুভ্রদেব উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকীর অনুসারী। 

সুভ্রদেবের ফেসবুকেও প্রান্ত সিদ্দিকীর ভূয়সী প্রশংসা করে একাধিক পোস্ট দেখা গেছে। সেখানে তিনি প্রান্তকে তার ‘রাজনৈতিক অভিভাবক’ ও ‘বটবৃক্ষ’ বলে অভিহিত করেছেন।

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী বলেন, একটি মেলা থেকে প্লাস্টিকের খেলনা পিস্তল কিনে সেই পিস্তলের ছবিসহ কৌতূহলবশত ফেসবুকে পোস্ট  করেছে সুভ্র। তবে একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে এ কাজটি শিশু সুলভ হয়ে গেছে। বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায় এবং পুলিশ ও জনগণের ভ্রান্তি দূর করা যায় সে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছি।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোরতুজা আলী বলেন, এটা খেলনা পিস্তল হোক আর যাই হোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। এতে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংগঠন হিসেবে এ দায়ভার আমরা গ্রহণ করবো না। উপজেলা ছাত্রলীগ দ্রুত জরুরি সভা করে এ বিষয়ে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।

বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল ওহাব বলেন, ওই পোস্ট দেখার পর আমরা ওই ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছি। পিস্তল আসল না নকল সে বিষয়েও আমরা  খোঁজখবর নিচ্ছি। পাশাপাশি এ ঘটনার কী ব্যাখ্যা তিনি দেন তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইন পরিপন্থী কাজ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জহির হোসেন/আরএআর