নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ, শহীদ মিনার ও জানালার গ্রিল ভাঙচুর, বিদ্যালয়ে নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিসহ নানান অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ধলনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে।

সোমবার (২৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সাবেক ওই সভাপতির নানান অপকর্মের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী প্রধান শিক্ষক তানিয়া সুলতানা, সহকারী শিক্ষক হাসিবুল আলম প্রমুখ।

তারা বলেন, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. রাশেদুল হক ২০০৬ সালের বিদ্যালয় ফান্ডের সাড়ে সাত লাখ টাকা আত্মসাৎ করে স্বেচ্ছায় পদ ছেড়েছেন। গত বছর বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি শ্রেণিকক্ষে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা, জানালার গ্রিল কাটা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের আসা-যাওয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে বাধা প্রদানসহ নানান অপকর্ম চালিয়ে আসছে।

তারা আরও বলেন, গত শনিবার দুপুরে সাবেক সভাপতির নির্দেশে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের মাঝখানের লাল বৃত্তের একাংশ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারা বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশের লক্ষ্যে সাবেক সভাপতিসহ দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক সভাপতি মো. রাশেদুল হক বলেন, আমি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। নিজের সন্তানের মতো নিজহাতে বিদ্যালয়টি গড়ে তুলেছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান সভাপতি শিল্পপতি রোকন মিয়া ষড়যন্ত্র করে আমাকে কমিটি থেকে বাদ দিয়েছেন।

সাবেক এই সভাপতি জানান, তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে তাকে বাদ দিয়ে তার স্বাক্ষর জাল করে বর্তমান প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি চারজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তারা নিয়োগে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করেছেন। এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেজন্য তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. রোকন মিয়া (বাবলু) এলাকায় একজন শিল্পপতি হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তিনি ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় থাকেন। এ বিষয়ে জানতে তাকে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুজ্জামান তুষার বলেন, এমপিওভুক্ত হওয়ার পর বিদ্যালয় নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। প্রশাসন সঠিক তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বের হবে।

কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, বিদ্যালয়ে নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ে বর্তমান ও সাবেক সভাপতির বিরোধ চলছে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে ফাঁসাতে শহীদ মিনার নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজু আহমেদ/এমজেইউ