‘হাওর অঞ্চলের জমিগুলো মূলত এক ফসলি। প্রায় সম্পূর্ণ জমিতেই ধান চাষ করা হয়। এ অঞ্চল ধান উৎপাদনের সবচেয়ে বড় বাধা হলো ফ্ল্যাশ ফ্লাড (হঠাৎ বন্যা)। পানি সরে যাওয়ার পর এবং পরবর্তী বন্যার আগেই ফসল কর্তন করতে স্বল্প মেয়াদি ধান চাষ করাই অন্যতম সমাধান। দীর্ঘমেয়াদি ধান চাষে উৎপাদন যতই বেশি হোক বন্যায় ধ্বংস হতে পারে পুরো উৎপাদন। তাই হাওর অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি ধান চাষ হতে পারে ধান উৎপাদনের মূল সহায়ক।’

‘হাওর অঞ্চলে নিরাপদ বোরো ধান উৎপাদনে স্বল্পমেয়াদি ধান জাতের জনপ্রিয়করণ’ শীর্ষক প্রকল্প আয়োজিত ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান প্রামাণিক এসব কথা বলেন। 

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জের মিঠামইন সদরের মহিষার কান্দি ভুগার মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) অর্থায়নে এ প্রকল্পে ব্রি ৮৮, ব্রি ৯২ ও বঙ্গবন্ধু ১০০ নামে তিনটি ধানের জাত ব্যবহার করা হয়।

অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান প্রামাণিক বলেন, ডিসেম্বরের ২০ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যেই এ জাতের চারা রোপণ করলে আগাম বন্যা আসার আগেই ধান কর্তন ও মাড়াই করা যায়। ধান সংগ্রহে মেশিনের ব্যবহার নিশ্চিত করলে শতভাগ ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। 

অনুষ্ঠানে প্রকল্প প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান প্রামানিক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. জয়নাল আবেদীন, সহকারী পরিচালক অধ্যাপক ড. মুমিনুল হক, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পরেশ কুমার শর্মা, মিঠামইন উপজেলা কৃষি অফিসার ও মিঠামইন সদর অঞ্চলের কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন।

ওই অঞ্চলের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, এই প্রথম বার আগাম জাতের ধান লাগিয়েছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক আগেই ধান পেকেছে এবং অনেক আগেই ধান উঠাতে পেরেছি। এমন স্বল্পমেয়াদি ও উচ্চফলনশীল ধানের জাত সরবরাহের জন্য সরকারের নিকট আবেদনও করেন তিনি।

বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. জয়নাল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশের মোট বোরো ধান উৎপাদনের প্রায় ২০ শতাংশ আসে এই হাওর অঞ্চল থেকে। এই প্রকল্পে স্বল্প মেয়াদি ধান চাষের মাধ্যমে কৃষকরা উপকৃত হবেন। এই প্রকল্পে কোনো সমস্যা থাকলে গবেষক সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করবেন।

মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর/আরএআর