মুখ থুবড়ে পড়েছে শুভসন্ধ্যা ও সোনাকাটা
অযত্নে অবহেলায় পর্যটক হারিয়েছে স্বল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা বরগুনার তালতলীর সম্ভবনাময় পর্যটনকেন্দ্র দুটি। হোটেল-মোটেল না থাকার পাশাপাশি পর্যটনকেন্দ্র সংস্কার না করায় সৌন্দর্য্য হারিয়েছে এসব পর্যটন কেন্দ্র। পাশাপাশি তীব্র ভাঙণের কারণে মিশে যাচ্ছে সাগরে।
কক্সবাজার-কুয়াকাটা ছাড়াও সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য বরগুনার তালতলীর সোনাকাটা ইকোটুরিজম থেকেও দেখা যায়। এখানে এলে চোখে পড়বে মায়াবি হরিণ, কাঠ বিড়ালি, কুমির, বানর, শুকরসহ নানান ধরনের বন্য প্রাণী ও সুন্দরবনের হাজারো রকমের গাছ। এক সময়ে এসব দৃশ্য দেখতে পর্যটকদের ভিড় থাকতো ১২ মাস।
বিজ্ঞাপন
তবে হোটেল-মোটেল না থাকা ও পর্যটন কেন্দ্রের ভেতরের ব্রিজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় এখন প্রকৃতির এসব সৌন্দর্য্য উপভোগ করার কেউ নেই।
বিজ্ঞাপন
সোনাকাটা ইকোটুরিজ্যমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রথম প্রথম প্রচুর দর্শনার্থী আসতো। তবে বনের মধ্যে কাঠের ব্রিজগুলো ভাঙা। আশপাশের থাকা খাওয়ার জায়গা নেই, তাই এখন আর কেউ আসে না। সপ্তাহে ১০-১২ জনের দেখা মেলে।
এদিকে মাথার উপরে নীল আকাশ, সামনে সমুদ্রের বিশাল জলরাশি আর পেছনে মন মাতানো ঝাউবনের কারণে স্বল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল তালতলীর শুভ সন্ধ্যা সি বিচ। তবে গত দেড় বছর ধরে বিচের পাশ থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করায় প্রায় ৮ থেকে ৯ ফুট দেবে গেছে। এক কিলোমিটার সি-বিচ এখন সমুদ্রগর্ভে। আর বিলীন হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার ঝাউগাছ।
শুভ সন্ধ্যা সি বিচের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন খান বলেন, বেসরকারি কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আইসোটেক অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করায় তীব্র ভাঙণে বিলীনের পথে শুভসন্ধ্যা। গাছ পালা ও রাস্তার ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকায় আটকে গেছে রাস্তা। আর এ পর্যটন কেন্দ্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পর্যটকরা।
বরগুনা পর্যটন কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আরিফ রহমান বলেন, পর্যটনকেন্দ্রের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা জরুরি। তাতে একদিকে যেমন পর্যটকরা তৃপ্তি পাবে তেমনি সরকারও পাবে রাজস্ব। বরগুনাকেও চিনবে বিশ্ববাসী।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলোর উন্নয়নে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। এগুলো সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
খান নাঈম/এমএএস