সরকার লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে জনগণের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করেছে
রেলপথ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, জাতীয় আইনগত সহায়তার উদ্দেশ্য হলো সরকারি আইনি সেবা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি দরিদ্র ও অসহায় জনগণের ন্যায়বিচারে সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। তাই সরকার লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে বিনামূল্যে দেশের জনগণের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে লিগ্যাল এইড কল সেন্টার ‘জাতীয় হেল্পলাইন’ চালু করেন। এ হেল্পলাইনের ১৬৪৩০ নম্বরে যেকোনো ব্যক্তি ফোন করে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনি সেবা নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জাতীয় আইনগত সহায়তা আইন-২০০০ প্রণয়নের মধ্য দিয়ে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা কার্যক্রম শুরু করে। পরে এ আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্মেলন কক্ষে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসকে এখন শুধু আইনি সহায়তা দেওয়ার কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসকে ‘এডিআর কর্নার’ বা ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পক্ষসমূহের সম্মতির ভিত্তিতে লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এতে মামলার জট কমানো সম্ভব। এ জন্য দরিদ্র মানুষের জন্য কার্যকর আইনি সেবা নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন।
জেলা আইনগত সহায়তা কমিটির চেয়ারম্যান ও জেলা ও দায়রা জজ শরীফ হোসেন হায়দারের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পরস্পরের নির্বাহী পরিচালক ও কমিটির সদস্য আকতারুন নাহার সাকী এবং জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ সাবরিনা আলম বরাত প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত পঞ্চগড়ে মোট ২,৬৩৬টি মামলা হয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে ২,৩০৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৩৩০টি। এসব মামলা পরিচালনার জন্য চলতি বছরে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা পরিচালনার জন্য ৪৪ জন প্যানেল আইনজীবী রয়েছেন।
এর আগে জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে রঙিন বেলুন ও শান্তি প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন। পরে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শেখ হাসিনার অবদান, বিনামূল্যে লিগ্যাল এইডে আইনি সেবা দান’ এ প্রতিপাদ্যে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে গিয়ে শেষ হয়। এতে জেলা জজশিপের বিচারক, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন অংশ নেয়।
এসকে দোয়েল/এফকে