বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বাংলাদেশ অবশ্যই স্মার্ট হবে, কিন্তু আমাদের শ্রমিকদের স্মার্ট করে। কেবলমাত্র শ্রমিকদের স্মার্ট করেই বাংলাদেশ স্মার্ট হবে, তাছাড়া নয়।

সোমবার (১ মে) সন্ধ্যায় সাভারের আশুলিয়ার বগাবাড়ি এলাকায় মে দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

রাশেদ খান মেনন বলেন, মালিক-শ্রমিকের ঐক্যের কথা মধুর শোনালেও এটা কার্যকর নয়। কারণ মালিক আমাদের শ্রমিককে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। 

তিনি আরও বলেন, মে দিবস উপলক্ষ্যে ২০২১ সালে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে দুই জন গার্মেন্টস শ্রমিক মিলে আয় করতে পারেন ২০-২১ হাজার টাকা। কিন্তু তাদের সংসারের খরচ হচ্ছে ২৪ হাজার টাকা। বাকি তিন হাজার টাকার জন্য শ্রমিকদের ঋণের ফাঁদে পড়তে হয়েছে। চক্রবৃদ্ধি হারে সেই ঋণ তাদের পরিশোধ করতে হয়। বাংলাদেশের শ্রমিকদের যদি আজ বাঁচতে হয় তাহলে অবশ্যই তাদের মজুরি ২৩-২৪ হাজার টাকা হতে হবে। তাহলে শ্রমিকরা দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজন মেটাতে পারবেন। একজন শ্রমিকের বর্তমান মজুরি দিয়ে তাদের ১৫ দিনের বেশি চলে না।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আজকে যখন আমার গার্মেন্টস শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা, তাও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত মালিকরা মানতে বাধ্য হয়েছিলেন। তখন মালিক-শ্রমিকের ঐক্যের কথাটা আমাদের কাছে মধুর শোনালেও এটা কার্যকর নয়। কারণ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন মালিক।

তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ফ্যামিলি কার্ডে কোনো কাজ হবে না, ওএমএসের চালে কাজ হবে না। রেশন ব্যবস্থা চালু করেন। করোনার সময় যখন ধর্মঘট হয়েছিল তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সরকার, শ্রম মন্ত্রণালয় গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার কথা বলেছিলেন। সেই রেশন ব্যবস্থা চালু করতেই হবে। এছাড়া কোনো পথ আমার সামনে আপনার সামনে খোলা নেই।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আজ নতুন করে মজুরি বোর্ড গঠন হতে চলেছে। এই সালেই মজুরি বোর্ড গঠিত হবে। 

তিনি বলেন, কয়দিন আগে আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিকল্পনা মন্ত্রীর উপস্থিতিতে একটি পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেছে। যাতে বলা হয়েছে আমরা দারিদ্র্যসীমা কমিয়ে এনেছি। আমাদের ২১ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল, তা আজ ১৮ শতাংশে এসেছে। এটা আনন্দের কথা।

সব শেষে আশুলিয়ার বগাবাড়ি এলাকায় মে দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। আলোচনা সভা শেষে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কে র‍্যালী করে তারা।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হকের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক  সম্পাদক ফরিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় সাভার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন খানসহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রমিক নেতা ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন। 

মাহিদুল মাহিদ/আরএআর