প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ার কারণেই নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তি বর্মণকে (১৬) ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (৩ মে) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে প্রেমনগর গ্রামের পাকা ধানখেত সংলগ্ন একটি জঙ্গল থেকে ঘাতক কাউছার মিয়াকে (১৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বিকেল ৪টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এ প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, প্রেমনগর গ্রামের সামছু মিয়ার ছেলে কাউছার একই গ্রামের নিখিল বর্মণের মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তি বর্মণকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রেম নিবেদন ও উত্যক্ত করে আসছিল। মুক্তি প্রেমে সাড়া না দেওয়ায় বখাটে কাউছার ক্ষিপ্ত হয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মুক্তি বর্মণকে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুক্তিকে উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করে। 

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পরপরই ঘাতক বখাটে যুবককে ধরতে জেলা পুলিশের পক্ষে ৪টি টিম ৪ ভাগে বিভক্ত হয়ে মাঠে নামে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বুধবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে প্রেমনগর গ্রামের পাকা ধান ক্ষেত সংলগ্ন একটি জঙ্গল থেকে কাউছারকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাউছার হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে বলেও জানায় পুলিশ। 
 
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. লুৎফুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খালিয়াজুড়ি সার্কেল) রবিউল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাইনুল হক কাশেম বলেন, আমার উপজেলায় এমন নৃশংস ঘটনা আর কখনও ঘটেনি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘাতককে গ্রেপ্তার করায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি এই জঘন্য ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। যাতে আর কোনো বখাটে এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা না হলেও মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছিল বলে জানায় পুলিশ।

মো. জিয়াউর রহমান/এমএএস