শারীরিক প্রতিবন্ধী সাইমা

শেরপুরে টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে সাইমা (৮) নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুর। মেয়ের চিকিৎসার অর্থ জোগাতে এখান-সেখান ছুটে বেড়াচ্ছেন অসহায় বাবা-মা। সাইমা শেরপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কসবা ভাটিপাড়া মহল্লার জুলহাস উদ্দিন ও আছমা বেগমের মেয়ে। 

সাইমার বাবা জুলহাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, একসময় শরীরে শক্তি ছিল, পরিশ্রম করতে পারতাম। এখন বয়স হইছে, কাজ ঠিকমতো করবার পাই না। এরই মধ্যে ৮ বছর ধরে মাইটারে নিয়া চিন্তাই আছি। সাইমারে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি নিঃস্ব। এখন টাকার অভাবে সাইমার চিকিৎসা করাতে পারছি না।

সাইমার মা আছমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমনিতে আমাদের অভাবের সংসার। তার মধ্যে এই প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে অনেক চিন্তাই আছি। সমাজসেবা অফিস থেকে কয়েক মাস পর পর কিছু প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। কিন্তু  সেটা দিয়ে চলতে কষ্ট হয়ে যায়। সংসারে উপার্জনক্ষম কোনো মানুষ নেই। প্রতি মাসে সাইমার ওষুধ বাবদ প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ হয়। ওষুধ বন্ধ করে দিলে খিচুনি হয়। রাতে খুব কান্নাকাটি করে। 

তিনি আরও বলেন, ৮ বছরের একটি শিশুকে কতক্ষণ কোলে নিয়ে থাকা যায়। কেউ একজন একটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দিলে আমাদের অনেক উপকার হতো।

স্থানীয় এলাকাবাসী আমিনুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাইমাকে নিয়ে তার মা-বাবা অনেক অসহায়ত্বের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। চিকিৎসার টাকা যোগাড় করার জন্য সমাজের ধনীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন তারা।

সিদ্দিক নামে আরেক এলাকাবাসী বলেন, সাইমার কষ্ট দেখলে আমাদেরও খারাপ লাগে। আমাদেরও নুন আনতে পানতা ফুরায়। ইচ্ছে থাকলেও সাহায্য করতে পারি না। প্রতিবন্ধী ভাতার পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে সাইমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে ভাল হতো।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাইমার পরিবার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার পাশাপাশি সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা করে দিব।

জাহিদুল খান সৌরভ/এসপি