টাঙ্গাইলের মধুপুরে সহযোগিতার কথা বলে এক কি‌শোরীকে (১৬) গণধর্ষণের উঠেছে। এ ঘটনায় পু‌লিশ চারজন‌কে গ্রেপ্তার ক‌রে‌ছে। শনিবার (৬ মে) ভোররাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ফুলবাগচালা ইউনিয়নের বাঘাডোবা গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মো. সজিব মিয়া (২৮), একই ইউনিয়নের কালিয়াকুড়ি (কামারতাফাল) গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান (৩৮), জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর ইউনিয়নের ক্ষেত্রীপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মো. মামুন (২৬) ও একই ইউনিয়নের ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে হাফিজুল ইসলাম (৩০)। এদের মধ্যে সজিব মিয়া ও হাফিজুর রহমান কিশোরীকে ধর্ষণের কথা আদালতে স্বীকার করেছে।

এর আগে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনাঞ্চলের চাঁনপুর রাবার বাগানের কালারপাহাড় এবং জামালপুরের রশিদপুর ইউনিয়নের সর্দারবাড়ি এলাকায় একই দিনে পালাক্রমে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। 

জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা ওই কিশোরী চাকরির সুবাদে শেরপুর শহরে বসবাস করে। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ফুলবাগচালা ইউনিয়নের বাঘাডোবা গ্রামের নাজমুল ইসলামের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই কি‌শোরীর। গত শুক্রবার (৫ মে) নাজমুলের সঙ্গে আলোচনা করে ওই কিশোরী মধুপুরের ফুলবাগচালার বাঘাডোবা গ্রামে আসতে চায়। নাজমুলের চাচাতো ভাই  সজিব মিয়া (২৮) তাকে জামালপুরের রশিদপুর ইউনিয়নের চৌরাস্তা নামক স্থান থেকে নাজমুলের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ভিন্ন পথে মধুপুরের চাঁনপুর রাবার বাগানের কালাপাহাড় নামক স্থানে নিয়ে যান। 

শুক্রবার (৫ মে) বিকেল ৫টার দিকে সজিব তার সহযোগী মধুপুরের কালিয়াকুড়ি (কামারতাফাল) গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর সজিব ও হাফিজুর তাকে চানপুর রাবার বাগানের কালারপাহাড় থেকে একটি অটোরিকশাযোগে জামালপুরের রশিদপুর ইউনিয়নের চৌরাস্তা নামক স্থানে তাকে ছেড়ে দিয়ে আসেন। 

ওই কিশোরী রাত সাড়ে ৮টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় রশীদপুর চৌরাস্তা থেকে জামালপুরের দিকপাইত যাওয়ার জন্য অটোস্ট্যান্ডের লাইনম্যান মামুন মিয়ার সহযোগিতা কামনা করেন। মামুন সহযোগিতার কথা বলে ওই কিশোরীকে রশীদপুর সর্দারপাড়ার খালপাড় এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে একই ইউনিয়নের ভাটিপাড়া গ্রামের হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মিলে ওই কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর মামুন ও হাফিজুল মেয়েটিকে পুনরায় রশীদপুর চৌরাস্তা এলাকায় রেখে পালিয়ে যান।

এদিকে নাজমুল ইসলাম তার প্রেমিকাকে না পেয়ে খোঁজাখুজি করতে শুরু করেন। নাজমুল রাত ১১টার দিকে জামালপুরের রশিদপুর চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে প্রেমিকার সন্ধান পান। পরে তিনি বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় গভীর রাতে মধুপুর থানা পুলিশকে অবহিত করেন।

খবর পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মুরাদ হোসেনের নেতৃত্বে একাধিক টিক ভিকটিমকে উদ্ধার এবং ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। প‌রে বি‌ভিন্ন জায়গা থে‌কে চারজন‌কে গ্রেপ্তার করা হয়। 

মধুপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইলের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে সজিব মিয়া ও হাফিজুর রহমান ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। ওই কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর