পিরোজপুরের কাউখালীতে পরকীয়ার জেরে বড় ভাই মো. মাহাবুবুর রহমান কাজীকে হত্যার ২৫ বছর পর ছোটভাই ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৫ মে) তাদের গ্রেপ্তারের পর রোববার (৭ মে) তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এর আগে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার (৬ মে) রাতে তাদের কাউখালীতে নিয়ে আসা হয় বলে জানান কাউখালী থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাকারিয়া জাকির।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত মাহাবুবুর রহমানের ছোট ভাই তোহেবুর কাজী (৬০) ও তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৫০)। ঘটনার পর কাউখালী থানায় মামলা হলে পলাতক অবস্থায় ছোটভাই তোহেবুর কাজী ও তার স্ত্রী আলেয়া বেগমের নামে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কাউখালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোসনতারা গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে মাহাবুবুর রহমান কাজীর স্ত্রী আলেয়া বেগমের সঙ্গে তার (মাহাবুব কাজী) ছোট ভাই তোহেবুর কাজীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৯৯৮ সালের ১৭ জুন বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে দুই ভাইয়ের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাহাবুব কাজীকে তার স্ত্রী আলেয়া বেগম ও ছোটভাই তোহেবুর কাজী পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করেন। পরে ছোটভাই তোহেবুর কাজী তার ভাবী আলেয়া বেগমকে গোপনে বিয়ে করে পালিয়ে ঢাকায় চলে যান। তারা পালিয়ে গিয়ে ঢাকায় যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। সেই ঘটনার প্রায় ২৫ বছর পর কাউখালী থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের যাত্রাবাড়ী কাজলার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে কাউখালীতে নিয়ে আসেন।

আরও জানা যায়, হত্যার পরদিন নিহতের আত্মীয় মুক্তি বেগম বাদী হয়ে তোহেবুর কাজী ও তার স্ত্রী (পূর্বের ভাবী) আলেয়া বেগমকে আসামি করে কাউখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায় করেন। এই মামলায় ২০০৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পিরোজপুর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত তাদের দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

ওসি জাকারিয়া জাকির বলেন, নিহতের ভাই ও তার স্ত্রীকে ২৫ বছর পর পুলিশ ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকার কাজলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা ওই হত্যা মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। তাদের গ্রেপ্তারের পর আজ সকালে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আবীর হাসান/এবিএস