বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যা মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার (শ্যোন আরেস্ট) দেখিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকাল ১১টায় নোয়াখালী ২ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক এসএম মোছলেহ উদ্দিনের আদালতে তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

গ্রেফতাররা হলেন— বসুরাহট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী চরপার্বতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ব্যবসায়ী সিরাজুল হক হাসেম, চরএলাহী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল মালেক ও মুছাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইকবাল বাহার চৌধুরী।

এ ব্যাপারে পিবিআই তদন্তকারী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনজনকে মুজাক্কির হত্যা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। তবে বিচারক উপস্থিত না থাকায় শুনানি হয়নি।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেন, ‘আমার তিন কর্মীকে মিথ্যা মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে মুজাক্কির হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে আমি বলেছিলাম, মুজাক্কির হত্যাকাণ্ডে জজ মিয়াদের ফাঁসানো হবে।’

তিনি আরও লিখেন, ‘আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে আমার কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন করব। সাংবাদিক মুজাক্কিরকে নিজ হাতে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী মিজানুর রহমান বাদল। তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখানোর জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় কোম্পানীগঞ্জে আগুন জ্বলবে।’

উল্লেখ্য, ১৮ মার্চ মুজাক্কির হত্যা মামলায় ১২ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পিবিআই। তারা হলেন— কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের অনুসারী চরফকিরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউসুফ নবী বাহাদুর, আলমগীর হোসেন, আবদুল আমিন, রাহাদ, আজিজুল হক মানিক, সুজায়েত উল্যাহ, মোশারফ হোসেন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিক্রম চন্দ্র, ফয়সাল আলম, মাসুদুর রহমান, সেলিম ও চরকাঁকড়ার দেলোয়ার হোসেন।

১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ববাজারে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরসহ অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ হন।

পরদিন শনিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুজাক্কির। এ ঘটনায় তার বাবা নুরুল হুদা মো. নোয়াব আলী বাদী হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

হাসিব আল আমিন/এমএসআর