‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ’
খুলনা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের শর্ত রয়েছে, নির্দলীয় জাতীয় সরকার না হলে দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। স্থানীয় নির্বাচনে আমরা অংশ নিয়েছি সরকারের অবস্থানটা কী তা যাচাই করার জন্য। তারা যদি এই নির্বাচনে নিরপেক্ষ পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা আগামী নির্বাচনে সরকারকে একটা ম্যাসেজ দিতে পারবো যে আপনাদের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
রোববার (১৪ মে) কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের কাছে মনোনয়নপত্র জমাদান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সন্দিহান ও শঙ্কায় আছি। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটাই হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।
ইভিএম সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা ইভিএমের বিরুদ্ধে আগেও বলেছিলাম, এখনো বলছি। ইভিএমের অস্পষ্টতা আছে। এটি সাধারণ জনগণ এখনো বুঝে উঠতে পারেনি। রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন আপনারা বুঝান, আমরা সাড়ে ৫ লাখ জনগণকে কী করে গিয়ে বুঝাবো। এ জন্য আমরা এখনো দাবি করছি যেহেতু জাতীয় নির্বাচন ব্যালটের মাধ্যমে হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সিটি নির্বাচনও ব্যালটের মাধ্যমে হোক। এটা আমরা কামনা করছি। তারপরও ইভিএমের মাধ্যমে যদি সরকার দেয়ই, তাহলে জনগণকে সাধ্যমতো বোঝানোর চেষ্টা করবো।
বিজ্ঞাপন
মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসেনি, সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়, আমরা দলীয় সিদ্ধান্তে স্থানীয় নির্বাচন করছি। চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছি আমরা, নানা প্রতিকূলতার পরও আমাদের ১৩ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সিটি নির্বাচনেও ৫ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। খুলনায়ও অংশগ্রহণ করেছি। জনগণকে আমরা মেসেজ দিচ্ছি আপনারা ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাড়ি বসে থেকে চুপ থাকলে তো হবে না। আপনারাও ভোটকেন্দ্রে আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
খুলনা সিটি দীর্ঘদিন যাবত বসবাসের অনুপযোগী শহরে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা একটি বড় সমস্যা। রাস্তা-ঘাটের বিশৃঙ্খল উন্নয়ন, এক সংস্থা এসে খোঁড়ে, আরেক সংস্থা এসে রাস্তা খুঁড়ে ফেলে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অপরিকল্পিত। খুলনা শহরটা অপরিকল্পিত এবং বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খুলনায় কর্মসংস্থান নেই। বেকারত্বের অভিশাপে মানুষ জর্জরিত। খুলনার নাম ছিল আগে শিল্পনগরী, এখন মৃত নগরীতে পরিণত হয়েছে। সব মিলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এটা সিটি করপোরেশনের মধ্যে। ইচ্ছা করলে সিটি করপোরেশন অন্যান্য সংস্থা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারতো। আমরা চাই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে, মাদকমুক্ত সমাজ গঠন করতে, দারিদ্র্যমুক্ত নগরী চাই। খুলনা নগরীকে সুন্দর, সুশৃঙ্খল, আদর্শ আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো।
মনোনয়নপত্র জমাদানকালে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের খুলনা মহানগর সহ-সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাচন পরিচালক শেখ মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী নির্বাচন পরিচালক মুফতি আমানুল্লাহ, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান এজেন্ট শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মুফতি ইমরান হোসাইন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু গালিব, সহকারী মিডিয়া সমন্বয়কারী মিরাজ আল সাদী।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেল পর্যন্ত কেসিসি নির্বাচনে ৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে একজন, সাধারণ কাউন্সিল পদে ২৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭ জন। তবে মেয়র পদে সাতজনসহ সর্বমোট ২২৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর