ছেলে হত্যার বিচার কি পাব না?
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার কলেজছাত্র আরিফুল ইসলাম হত্যার বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে তার পরিবার। হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মামলা করা হলেও আসামিদের ধরা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। এ ঘটনায় রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে আরিফুল হত্যার বিচার চেয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বুড়াবুড়ি গ্রামের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়, আরিফুল পাশের বাড়ির এক মেয়েকে খুব পছন্দ করতো। তাকে না দেখে থাকতো পারতো না। এ কারণে এলাকার হার্বাট, রেজাসহ কয়েকজন তাকে গুম কিংবা মেরে ফেলার হুমকি দেয়। গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় আরিফুল ইফতার শেষে বাড়ি থেকে বের হলে আর ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়। এর তিন দিন পর ৭ এপ্রিল দুপুরে গ্রামের পাশে একটি পাথরের কোয়ারি থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় আরিফুলের মরদেহ পাওয়া যায়। আরিফুলকে হার্বাট, আনিছুর, পলাশ ও রুবেলরাই হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
বিজ্ঞাপন
নিহত আরিফুল বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বুড়াবুড়ি গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি পঞ্চগড় টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। গত ১৩ এপ্রিল আরিফুল হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেন কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
নিহত আরিফুলের মা মোছা. আনজুনা বেগম বলেন, আমার ছেলের হত্যায় জড়িতদের ফাঁসি চাই। রেজা, হার্বাট সকালে একবার আবার বিকেলে একবার হুমকি দিয়ে গেছে। রাতের বেলায় আমার স্বামী-সন্তান ছিল না, আমাকে বিভিন্ন হুমকি দেখিয়েছে। ঘটনার বিষয়টি মানুষজনকে না বলার জন্য। মসজিদের সামনে অনেক মানুষকে আমি বলে দিয়েছি। তারাই আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমার সন্তানের হত্যার বিচার পাচ্ছি না কেন। মা হয়ে এ ব্যথা কীভাবে সহ্য করব। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা কি বিচার পাব না?
বিজ্ঞাপন
আরিফুলের বড় ভাই আমিনুর ইসলাম বলেন, এক মাস ধরে আমার ভাইয়ের হত্যার বিষয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করে আসতেছিলাম। কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে জেলা জজ কোর্টে মামলা দায়ের করি। মামলাটি এখনো এন্ট্রি হয় নাই। এই মামলাটি বিজ্ঞ আদালত যেন সুনজরে সেই দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম হার্বাট বলেন, আমি জেলা যুগ্ম জজ আদালতে প্রসেস সার্ভার পদে চাকরি করি। মসজিদে ঢুকে এলাকার সকল মুসল্লিদের সামনে বলেছি পবিত্র কুরআন শরীফ নিয়ে কসম কেটে বলতে পারি আমি এই খুনের সঙ্গে জড়িত নই। আমি চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক। অন্যান্য অভিযুক্তরা আমার আত্মীয়।
তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) আরমান আলী বলেন, আরিফুলের ঘটনায় তার পরিবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় এজাহার দিয়েছিল। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
এসকে দোয়েল/আরএআর