নড়াইলে মেয়ের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে হল সুপারের দায়িত্ব পালন করার ঘটনায় মো. শরিফুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে হল সুপারের দায়িত্বে ছিলেন।

রোববার (২১ মে) কেন্দ্রসচিব নাসির উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, শরিফুল ইসলামের মেয়ে এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে সেটি জানতাম না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে জেনে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মেয়ে এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে শরিফুল ইসলাম এই তথ্য গোপন করে কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করে। এটা গুরুতর অপরাধ। এ কারণে তাকে পরবর্তী পরীক্ষার সব দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হায়দার আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। কেন্দ্র সচিব তাকে বরখাস্ত করেছেন। এ সংক্রান্ত চিঠি ১৫ মে পাঠানো হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শরিফুল ইসলাম নড়াইল সদর উপজেলার আরবিএফএম ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার মেয়ে শিবানা নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষা শুরুর দিন থেকেই পরিচয় গোপন করে ওই কেন্দ্রে হল সুপারের দায়িত্ব পালনের অভিযোগ উঠেছে তার ছাত্রীর বাবা শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন অভিভাবক মহলসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে।
   
অভিযোগ উঠে, নিয়মিতভাবে প্রতিটি পরীক্ষার দিন মেয়ে শিবানা খাতুনের কক্ষে গিয়ে তাকে সহযোগিতা করেন শরিফুল ইসলাম। এমনকি নিজের পছন্দের শিক্ষককে ওই কক্ষে ডিউটি দিয়ে মেয়েকে সহযোগিতা করান তিনি। গণিত পরীক্ষার দিন শরিফুল ইসলাম মেয়েকে সহযোগিতা করার জন্য নিজ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষককে ওই কক্ষে ডিউটি দেন।

এ বিষয়ে নড়াইল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, শিবানা খাতুন নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে ১১৪ নম্বর রুমে পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম মেয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রেই হল সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি মেয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, এ ধরনের দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নেই। প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম মেয়ে শিবানার পরীক্ষা দেওয়ার তথ্য গোপন করেই হল সুপারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। 

আরবিএফএম ভবানীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের সাবেক হল সুপার শরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, তার কোনো মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে না।

তাহলে ১১৪ নম্বর কক্ষে গিয়ে শিবানা নামের মেয়েটিকে সাহায্য করেন কেন, পছন্দের শিক্ষকদের ওই কক্ষে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডিউটি দিয়ে মেয়েটিকে সাহায্য করান কেন, এসব প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই মেয়েটি তার বন্ধুর মেয়ে। তাহলে ওই মেয়ের প্রবেশপত্রে আপনার নাম লেখা কেন, এমন প্রশ্নে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। 

বহিষ্কারাদেশ পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো চিঠি পাইনি। তবে মৌখিক আদেশের প্রেক্ষিতে আমি দায়িত্ব পালন করছি না। 

সজিব রহমান/আরকে