নেত্রকোণা সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুর ১টার দিকে বালি মহিষাটী দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নেত্রকোণা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুইপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ অনেক চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকাল ৮টা থেকে বালী মহিষাটী দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ চলছিল। বেলা ১টার দিকে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী হঠাৎ করে কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের স্লিপ সরবরাহকারীদের ওপর চড়াও হয়। এতে স্বতন্ত্র তিন প্রার্থীর লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এ নিয়ে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। পরে পুলিশ দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামছুর রহমান লিটন বলেন, স্বতন্ত্র তিন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলায় নৌকা প্রতীকের অন্তত ১০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আহত কর্মী-সমর্থকদের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। সংঘর্ষে আহত জেলা যুবলীগ নেতা অসীম বিশ্বাসসহ তিনজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে রির্টানিং অফিসার ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হোসনে আরা বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে বালী মহিষাটী দাখিল মাদ্রাসা (শ্রীপুর বালী) কেন্দ্রের বাইরে ভিন্ন ভিন্ন কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। পরে আইনশৃংখলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এদিকে স্থানীয় নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে এডভোকেট মো. আব্দুর রহমান, ঢোল প্রতীক নিয়ে মো. নাসির উদ্দিন রানা, আনারস প্রতীক নিয়ে খন্দকার আজিজুর রহমান মাজহারুল ও ঘোড়া প্রতীক নিয়ে মোখলেছুর রহমান দৌলত।

এই ইউনিয়নে মোট ১৬ হাজার ৯৮৩ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৫৮৫ জন, আর নারী ভোটার ৮ হাজার ৪৯৭ জন। সকাল ৮টা থেকে ১০টি কেন্দ্রে একযোগে ইভিএমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুলসংখ্যক আনসার, পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি ও র‌্যাবের সার্বক্ষণিক টহল অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, বিএনপি সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ সেলিম গত ১৩ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জিয়াউর রহমান/এবিএস