নরসিংদীতে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছেন দুর্বৃত্তরা। বুধবার (৩১ মে) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নে অবস্থিত খায়রুল কবির খোকনের বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে। এটি জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবেও পরিচিত। 

বুধবার (৩১ মে) বিকেলে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল মান্নান আনসারী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বিকেল পৌনে ৫টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে ১০-১২ জন দুর্বৃত্তরা খায়রুল কবির খোকনের বাড়ির সামনে যান। এসময় তারা বাড়ির ভেতর পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। ভয়ে বাড়ির কেয়ারটেকার জাকির পালিয়ে যান। পরে তারা বাড়ির গেইট ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির দোতলায় উঠে প্রথমে পশ্চিম পাশের রুমটিতে আগুন দেয়। পরে পর পর প্রতিটি কক্ষে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

তবে ২৫ মে দুই পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনার কারণেই এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল মান্নান আনসারী জানান, আমরা সোয়া ৫টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়েছি। খবর পাওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পরে আমরা এসে দেখি ঘরের প্রতিটি রুমের মধ্যে আগুন জ্বলতেছে। আমরা প্রায় আধাঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিভিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া বাড়িতে ঢোকার সময় নিচে দুটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পেয়েছি। তবে কী থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তা এখন বলা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের ৫ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ। দীর্ঘ ১২ বছর পর ঘোষিত ওই কমিটিতে সিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া। প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় তার কর্মী-সমর্থকেরা ওই দিনই জেলা বিএনপির কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শতাধিক প্লাস্টিকের চেয়ার, ব্যানার, প্রচারপত্র ও ফেস্টুনে আগুন ধরিয়ে দেন। এরই ধারাবাহিকতায় দফায় দফায় চলতে থাকে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড। পরে সর্বশেষ ২৫ মে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা মাঈনউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল নিয়ে বের হয়। পরে সেখানে দুর্বৃত্তের ছোঁড়া গুলিতে সাদিকুর রহমান সাদিক ও আশরাফুল ইসলাম নামে দুই পদবঞ্চিত নেতা নিহত হন। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও তার স্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও অজ্ঞাত ৩০/৪০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে নিহত সাদিকুরের ভাই আলতাফ হোসেন। 

তন্ময় সাহা/আরকে