বিয়ের এক বছর হওয়ার আগেই বিচ্ছেদের সুর বেজে উঠেছে আলোচিত-সমালোচিত মডেল ও অভিনেত্রী সানাই মাহবুবের সংসারে। বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইঙ্গিতের পর দাম্পত্য কলহ ও বিচ্ছেদের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনের কথা জানালেন সানাই। 

বুধবার (৩১ মে) রাত ১১টা ৫১ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে সানাই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনের কথা জানান তিনি।

ভেরিফায়েড পেজে সানাই লেখেন, আসসালামু আলাইকুম, শনিবার আমার শ্রদ্ধেয় সংবাদিক ভাইয়ারা আসবেন। আমি ছোট খাটো একটা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করছি। আমি অনেক চুপ করে থেকেছি, এই এক বছরে যে পাশবিক নির্যাতন আমার স্বামী আবু সালেহ মুসা আমার সঙ্গে চালিয়েছে এবং এই নির্যাতনে তার পরিবার বরাবর চুপ থেকেছে। আর আমার পরিবার আমাকে বলেছে," মানিয়ে নাও.. " এটা থেকে ফাইনালি বের হওয়া দরকার। আমার কাছে কিছু ভয়েস ক্লিপ আছে (যেগুলা আমি বাধ্য হয়েছি রেকর্ড করতে) যেগুলো শুনলে ইনশাল্লাহ প্রমাণ হবে আসলে কে দোষী। সবাই জানেন যে, আমি সংসার করার জন্য সব ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছিলাম। কিন্ত সেই সংসারটার অবস্থা তো এরকম হওয়ার কথা ছিল না। এতো মানসিক আর শারীরিক নির্যাতন হওয়ার কথা ছিল না। এ জন্যই এই সংবাদ সম্মেলন।

আরও পড়ুন : স্বামীকে ঝাড়ুপেটা করলেন সানাই মাহবুব

এর আগে রাত ৮টা ৫৮ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে সানাই লেখেন, আসসালামু আলাইকুম, ডিভোর্সের অফিশিয়াল কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমার জন্য দোয়া করবেন। বিপদে যেন আমি মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ি। কিছু সম্পর্ক শেষ হওয়াই ভালো। আলহামদুলিল্লাহ ফর এভরিথিং।

সেই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে সানাই মাহবুবের স্বামী আবু সালেহ মুসার সঙ্গে ঢাকা পোস্টের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘একটু আগেই ভালো ছিল। হঠাৎ বটি নিয়ে এসে আমায় আঘাত করে। পরে ভাগ্য ভালো বাসা থেকে বাইরে চলে আসতে পারছি। আজকে ঝাড়ু দিয়া মাইরও দিছে, এর আগে  লাথিও মারছে তবুও আমি কিছু বলি নাই। আজকে দুই তিনটা লাথি মারছে, আমার কিডনির সমস্যা করে দিছে। তারপরও আমি কিছু বলিনি। তার সঙ্গে আজ একটু কথা কাটাকাটি হইছে এজন্য ঝাড়ু দিয়া মাথায় মারছে। তারপর আমি একটা থাপ্পড় দিছি। সেও আমাকে দুইটা থাপ্পড় মারছে।’

আবু সালেহ মুসা বলেন, ‘আমাকে প্রায় মারে এভাবে। আমি এ নিয়ে কিছু বলি না, কারণ চাই সর্ম্পকটা টিকে থাকুক। সে আমাকে আজকে বলে এই তুই আমাকে চড় মারিস, তুই আমাকে চিনস। তখন আমি হাসতে হাসতে বলেছি, দুই তিনশ চড় মারছো আমি একটা মারলামই না হয়। তারপর সে চেয়ার দিয়ে আমার শরীরে মারছে, রান্নাঘরে গিয়ে বটি আনছে মারার জন্য আমি তাই দেখে পালানোর চেষ্টা করি। এমন সময় আমার হাতে বটি দিয়ে আঘাত করে। ভাগ্য ভালো আমি বটি ধরতে পারছি। না ধরলে আজকে আমি মার্ডার হয়ে যাইতাম।’

এ বিষয়ে সানাই মাহবুবের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৭ মে পারিবারিক আয়োজনে কাউকে না জানিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে চেয়েছিল সানাইয়ের পরিবার। পরে ঠিকই জানাজানি হয়ে যায়। সানাইয়ের পৈতৃক নিবাস নীলফামারীতে। তার স্বামী মুসার বাড়িও একই জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দক্ষিণ দুরাকুঠি এলাকায়। যদিও এর আগে ২০১৯ সালে সানাইয়ের একটি বিয়ের খবর শোনা যায়। সাবেক এক মন্ত্রীর সঙ্গে তার বাগদান হয়েছিল। সানাই নিজেও খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেছিলেন। তবে ওই বিয়ে সম্পর্কে পরবর্তীতে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মডেল হিসেবে শোবিজে কাজ শুরু করেছিলেন সানাই মাহবুব। পাশাপাশি উপস্থাপনাও করেছেন। এরপর ২০১৬ সালে ‘ভালোবাসা ২৪×৭’ নামে একটি সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে পা রাখেন তিনি। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হলেও তার কোনো সিনেমাই মুক্তি পায়নি।

পেশাগত জীবনের চেয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার চর্চার কেন্দ্রে ছিলেন সানাই। শরীরে সার্জারি করিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন এই মডেল। তবে সেসব বিতর্ক ভুলে এখন নতুনভাবে জীবন পার করতে চান তিনি।

শরিফুল ইসলাম/আরকে