ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরডুব্বা গ্রামের গৃহবধূ হাজেরা খাতুন মনি (২৭) ও তার ছেলে ইমরান হোসেন ইয়ামিনকে (৬) হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী নুরুল আলম সোহেল (৩৪) পলাতক রয়েছেন। 

সোমবার (৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে হাজেরা খাতুন মনির ঝুলন্ত মরদেহ ও ছেলে ইয়ামিনের মরদেহ বিছানায় পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আরেক ছেলে ইরফান হোসেন আরাফাতকে (১৩ মাস) গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

যৌতুকের দাবিতে নুরুল আলম সোহেল (৩৪) এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ নিহত মনির মা জাহানারা বেগমের। তিনি দাবি করেন- যৌতুকের জন্য সোহেল এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। 

জাহানারা বেগম বলেন, সাপ্তাহ খানেক আগে আমার কাছ থেকে জামাই সোহেল দুই লাখ টাকা চেয়েছিল। আমি বলেছি, এখন আমরা ঋণগ্রস্ত তাই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। পরে সোহেল আমার মেয়ের মোবাইল ভেঙে ফেলেছে। আমার মেয়েকে সেদিন গলায় চুরি ধরে হত্যা করতে চেয়েছে। আমার বোনদের থেকেও সে টাকা দাবি করেছে।

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. খালেদ হোসেন বলেন, মায়ের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার দুই হাতের কবজিতে কাটা চিহ্ন রয়েছে। পেটে ছুরিবিদ্ধ ছিল। শিশু আরাফাতের মরদেহ খাটে পড়েছিল। তার গলায় দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করতে আসেননি বলে তিনি জানান। 

একাধিক প্রতিবেশী জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। 

অভিযুক্ত সোহেলের এক স্বজন বলেন, পরিবারের অন্যরা ঘরের বাইরে কাজে ছিল। পরে এ অবস্থায় দেখে আমরা জীবিত বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সম্প্রতি সোহেল একটি জায়গা কেনেন। এ নিয়ে তার স্ত্রী অসন্তুষ্ট ছিল। সে নতুন জায়গায় বাড়ি করলে যাবে না বলেও জানায়। এজন্য ঝগড়াও হয়।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাইদুল ইসলাম জানায়, অসুস্থ শিশুটির খুব বেশি শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর। 

বিষক্রিয়ার আলামত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট করে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বিষক্রিয়ার কারণেও এ ধরনের অবস্থা হতে পারে। 

আরএআর