বরিশাল বিএনপির সাবেক নেতা ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের পুত্র কামরুল আহসান রুপন টেবিল ঘড়ি প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চলতি নির্বাচনে। এজন‌্য তাকে আজীবন বহিস্কার করা হয়েছে বিএনপি থেকে। তারপরও তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে বলেন, প্রকাশ‌্যে সমালোচনা করেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিনের। ভোটের মাঠ আর সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন  ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন রুপন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক সৈয়দ মেহেদী হাসান।

ঢাকা পোস্ট : ভোটের দিন পরিবেশ কেমন থাকবে বলে আপনি মনে করেন?

কামরুল আহসান রুপন : আমি আশঙ্কা প্রকাশ করছি। নির্বাচন কমিশনের কথা ও কাজে কোন মিল নেই। আমার বাসার নিচে ঠিক ৮টায় ম‌্যাজিস্ট্রেট এসে প্রচার গাড়িতে মামলা দিয়েছে। এটিতো কোন নিয়ম না। প্রশাসন কি নিজেদের পদোন্নতির জন‌্য এমন আচরণ করেছে?

ঢাকা পোস্ট : আপনাকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করেছে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের আপনি কেন্দ্রে গিয়ে টেবিল ঘড়িতে ভোট দিতে বলছেন। ভোটাররা আপনার আহবানে কেন সাড়া দিবে?

কামরুল আহসান রুপন : আমার দল বিএনপির সাথে আমার কোন দূরত্ব নেই। সাধারণ যারা ভোটার আছেন; বিশেষ করে বিএনপির যারা সমর্থক তারা অবশ‌্যই আমাকে ভোট দিবেন। আমি একজন ব‌্যক্তির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। খোঁজ নিয়ে দেখেন তার (বিলকিস জাহান শিরিন) কোন জনপ্রিয়তা নেই। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঝাড়ু, জুতা মিছিল। কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। সে নির্লজ্জভাবে অর্থের বিনিময়ে কমিটিগুলো দিচ্ছে। তার স্বামী এই সরকারের আমলে কনস্টেবল থেকে এসআই হয়েছে। আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে এই ধরণের নেতৃত্ব যদি বরিশাল বিভাগে থাকে সর্বোপরি ক্ষতিটা হবে বিএনপির।

ঢাকা পোস্ট : নির্বাচনে আপনি কোনো হয়রানির শিকার হয়েছেন…

কামরুল আহসান রুপন : গোয়েন্দা সংস্থা হয়রানি করেছে এমন নয়। আমাকে পুলিশ প্রশাসন সহযোগীতা করছে না। তারা আমার তিনকর্মীকে এয়ারপোর্ট থানায় এবং দুই কর্মীকে কাউনিয়া থানায় গ্রেফতার করেছে বিনা কারনেই। এভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

ঢাকা পোস্ট : আপনি বয়সে তরুণ প্রার্থী। সরকার, প্রশাসন কেন আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে?

কামরুল আহসান রুপন : আমার বাবা প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামাল বরিশাল জেলা এবং মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন। এই শহরের পৌর চেয়ারম‌্যান ছিলেন। তার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী আছে ৩০টি ওয়ার্ডে। তারা আমাকে বেছে নিয়েছেন, সাধারণ জনগণ আমাকে বেছে নিয়েছেন। একারনেই সরকার গুরুত্বপূর্ন মনে করছে। এছাড়া বরিশালে জাতীয় পার্টি অস্বিত্ববিহীন। জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তা নেই, তাদের ভোটব‌্যাংকও নেই। আর ইসলামী আন্দোলন আগের সিটি নির্বাচনে ২৪শ ভোট পেয়েছে; এবার  হয়তো কিছু বেশি পাবে। তাদের সমর্থকও নেই। যে কারনে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে আমাকে বেছে নেবেন—  এটাই তো স্বাভাবিক।

ঢাকা পোস্ট : নির্বাচিত হলে আপনি কোন কাজটি প্রথম করবেন?

কামরুল আহসান রুপন : নির্বাচিত হওয়ার পরে একটি কাজ নয় অনেকগুলো পরিকল্পনা করেছি। জলাবদ্ধতা নিরসন, খাল খনন, সড়ক, বর্ধিত এলাকা এবং বস্তিবাসীর জন‌্য কাজ শুরু করা।

সোমবার বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪ কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন। ভোট পর্যবেক্ষণে ১১৪৬ টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

ভোটে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চার হাজার ৪০০ পুলিশ, আনসার, এপিবিএন, র‍্যাব দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ১০জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবেন।

নির্বাচনে ৭জন মেয়র প্রার্থীসহ মোট ১৬৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।