সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এক প্রবাসী বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ওই বাংলাদেশির নাম জামাল উদ্দিন (৫৫)। রিয়াদের ভাতা মার্কেট এলাকা থেকে গত ১৩ জুন তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে সৌদি পুলিশ।

নিহত জামাল উদ্দিন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীপুর (৪নং ওয়ার্ড) দাইম মিয়া মোক্তার বাড়ির মৃত নূর ইসলাম বেপারীর ছেলে। নিহতের একমাত্র ছেলে মোঃ সাঈদ হৃদয় (২৩) তার সাথে সৌদিতে থাকে। জামালের পরিবারে তার স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে।

শনিবার (১৭ জুন) রাতে নিহতের ছেলে মোঃ সাঈদ হৃদয় ও এলাকার কয়েকজন প্রবাসী সংবাদটি নিশ্চিত করেন। মূলত গত ১৩ জুন সৌদি আরবের পুলিশ তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করলেও পরিবার সেই খবরটি জানতে পারে ৩ দিন পর।

সৌদি আরবে অবস্থানরত স্বজনদের বরাত দিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানান, জামাল উদ্দিনকে তার কক্ষে গলা কেটে হত্যা করে দরজা বন্ধ করে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটি (বলদিয়া) জামালকে ধরে নিয়ে গেছে প্রচার করে সেখানকার কয়েকজন সবজি ব্যবসায়ী।

এই ঘটনায় রিয়াদের মানকুফা থানা পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তিনজনকে আটক করে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলেও জানান নিহতের পরিবার।

এদিকে স্বামীকে হারিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন স্ত্রী ফরিদা আক্তার। নিহতের মরদেহ দেশে আনতে আহাজারি করছেন স্বজনরা। পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

স্ত্রী ফরিদা আক্তার বলেন, স্বামীকে জীবিত আর পাবো না। এখন অন্তত আমার স্বামীর লাশ চাই। সরকার সহযোগিতা করলে আমার সন্তান বাবার মুখ দেখতে পাবে।

কয়েকজন প্রবাসী জানান, নিহত জামাল উদ্দিন সৌদি আরবের রিয়াদে প্রায় ৩২ বছর বসবাস করছিলেন। তিনি ড্রাইভিং শেখাতেন, গাড়ি চালাতেন, পাশাপাশি সৌদি ভাতা মার্কেটের আজিজিয়া সবজি মার্কেটে কয়েকটি দোকান নিয়ে বেকার বাংলাদেশিদের দিয়ে কাজ করাতেন। এখানে বাঙালি কমিউনিটির দায়িত্ব পালন করতেন। এখানকার বাঙালিদের যেকোনো সমস্যায়ও এগিয়ে আসতেন তিনি।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ভাতা মার্কেটের আজিজিয়া সবজি মার্কেটের দোকান ভাড়া নেওয়া নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কয়েকজনের সাথে জামালের বিরোধ ছিল। বিরোধের জের ধরে তাকে খুন করা হয়েছে। তিনি তার কক্ষে একাই থাকতেন।

পরিবারের দাবি, জামালকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তার হাত ও পায়ের রগও কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। নিহতের মরদেহ স্থানীয় সমচি হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

তারেক চৌধুরী/টিএম