লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে কামরুল ইসলাম শুভ (১৩) নামের এক মাদরাসাছাত্রকে হত্যার অভিযোগে শাফায়েত হোসেন (৪৫) ও মোস্তফা কামাল (৩৮) নামে দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার (১৮ জুন) রাতে তাদেরকে রামগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে তাদেরকে লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত শাফায়েত হোসেন রামগঞ্জ উপজেলার কাওয়ালিডাঙ্গা গ্রামের মৃত নবী উল্যার ছেলে ও মোস্তফা কামাল ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৈরাটি গ্রামের ছফির উদ্দিনের ছেলে। তারা রামগঞ্জ মোহাম্মদিয়া এতিমখানা কমপ্লেক্সের শিক্ষক।

জানা যায়, রামগঞ্জ উপজেলার সাউধেরখীল গ্রামের ভূঁইয়া গাজী ব্যাপারী বাড়ির দুবাই প্রবাসী কামাল হোসেন ও গৃহিণী রেখা আক্তারের একমাত্র ছেলে কামরুল ইসলাম শুভ। সে স্থানীয় মোহাম্মদিয়া এতিমখানা কমপ্লেক্সে হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। মাদরাসায় আবাসিকে থেকে পড়াশোনা করতো শুভ। রোববার সকালে মাদরাসা থেকে শিক্ষক মোস্তফা কামাল মুঠোফোনে শুভকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে তার মা রেখাকে জানান। তখন রেখা তার ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে ওই শিক্ষককে বলেন। পরে তিনি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে শুভ’র নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তিনি ছেলের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। পরে ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে রেখা আক্তার বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত দুই শিক্ষকের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

রামগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের লক্ষ্মীপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর মাদরাসার শিক্ষক সাফায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শুভ রোববার ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়েছে। পরে সে ক্লাসরুমে আসে। কিছুক্ষণ পড়ার পর জানায় তার মাথাব্যথা করছে। এতে তার মাথায় মলম লাগিয়ে বিশ্রামে পাঠানো হয়। কিছুক্ষণ পর তাকে নাস্তার জন্য ডাকতে গেলে দেখা যায় তার মুখ দিয়ে লালা ঝরছে। সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয় এবং শুভকে হাসপাতাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমজেইউ