রংপুরের বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণ হলেও দুর্নীতির ৯টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যক্ষ মাজেদ আলী খানের পদটি জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়ে। 

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় সাংসদ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক ও কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করার অভিযোগ তুলেছেন কলেজটির শিক্ষকরা। বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে বদরগঞ্জের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তারা।
 
শিক্ষকরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত প্রচেষ্টায় কলেজটি জাতীয়করণ হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কলেজের জমি থেকে শুরু করে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং কলেজের আর্থিকসহ সব বিষয়ে অডিট করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই অডিটে অধ্যক্ষ মাজেদ আলী খানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ ১০টি অনিয়মের মধ্যে ৯টি অভিযোগ প্রামাণিত হয়।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মাজেদ আলীর শাস্তির সিদ্ধান্তর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। মন্ত্রণালয় ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল মাজেদের বিরুদ্ধে শাস্তির প্রজ্ঞাপন জারি করেন এবং ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি অধ্যক্ষ মাজেদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে ৭ এপ্রিল রংপুর আঞ্চলিক দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা এখনও চলমান রয়েছে।
 
জানা গেছে, দুর্নীতির ৯টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া এবং দুদকে মামলার কারণে কলেজ জাতীয়করণ কার্যক্রমে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদ সৃজন শেষ হলেও অধ্যক্ষের পদ সৃজন হয়নি। 

শিক্ষকরা জানান, পদসৃজনে অধ্যক্ষ বাদ পড়ায় কলেজের ৮ শিক্ষকের নামে বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করেছেন। যেসব অভিযোগ দিয়ে শিক্ষকদের হয়রানি করছেন, সেই অভিযোগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে দারস্থ হলেও আদালতও শিক্ষকদের পক্ষেই রায় দিয়েছেন।
 
শিক্ষকের অভিযোগ, আট শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কোথাও কোনো ফায়দা লুটতে না পেরে এবং দুর্নীতির কারণে জাতীয়করণে নিজের পদ সৃজন করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে অধ্যক্ষ স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকসহ আমাদের বিরুদ্ধে এবং নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। যাতে করে বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণ কার্যক্রম থেকে বাদ পড়ে। এই অবস্থায় আমরা অধ্যক্ষ মাজেদ আলী খানকে দ্রুত অপসারণ করার দাবি করছি। সেঙ্গ সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কলেজ জাতীয়করণ করায় অভিনন্দন জানাচ্ছি।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কলেজের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপনন বিভাগের প্রভাষক ফরিদুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের আলীনুর রহমান, বাংলা বিভাগের নিরঞ্জর কুমার, শামীম আল মামুন, রাশেদা খাতুনসহ অনেকে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস