বৃষ্টিপাত ছাড়াই সকাল থেকে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর ও ছাতক উপজেলা দিয়ে  হু হু করে নামছে ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে পাড় উপচে ৬ উপজেলার সড়ক ও বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।

ঘর-বাড়ি ও সড়ক বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়রা। বৃষ্টিপাত ছাড়া আকস্মিকভাবে এতো দ্রুত পানি বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন সুনামগঞ্জের মানুষ। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হওয়ায় আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ভোর পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও দুপুর তিনটার দিকে সুরমা নদীর পানি ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসময় সুনামগঞ্জে কোনো বৃষ্টিপাত না হলেও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে পৌরশহরের সাহেববাড়ি সড়কে পানি ঢুকে পড়েছে। একইভাবে ছাতক স্টেশনের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

এদিকে পাহাড়ি ঢলে দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রাস্তাঘাট ও বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে তাহিরপুর আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে। এছাড়া জেলার সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও ধর্মপাশা উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে নিচে তলিয়ে আছে। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটসহ বাড়ি-ঘর। তবে সব থেকে বেশি খারাপ সুনামগঞ্জ ও ছাতকের পরিস্থিতি।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা, জাহাঙ্গীর নগর ও মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের রাস্তাঘাটে হাঁটু সমান পানির নিচে তলিয়ে আছে। একইভাবে ছাতকের ইসলামপুর, নোয়ারাই, চরমহল্লা ইউনিয়নের গ্রাম ও সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষকে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো মামুন হাওলাদার জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়ে গেছে। 

সোহানুর রহমান সোহান/এমএএস