কারাগারে পরিচয়, জামিনে বের হয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় অস্ত্র, গুলিসহ ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তিন ডাকাত। তারা কারাগারে পরিচয় সূত্রে এই ডাকাতির পরিকল্পনা করেন বলে জানায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নিজ সম্মেলন কক্ষে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া তিন ডাকাত হলেন, লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের ইউসুফ মিয়ার ছেলে আরিফ হোসেন আরিফ (২৮), একই এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে মো. জুয়েল (২৩) ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভার হাজীপুর গ্রামের খালাশি বাড়ির ইমরান হোসেন সুজন ওরফে খালাশি সুজন (৩০)।
অপর গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. মাসুদ আলম ওরফে মাসুদ (৪০) ও নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পশ্চিম পরকোট ইউনিয়নের নুর মিয়া পাটোয়ারীর ছেলে ফজর আলী জাহাঙ্গীর ওরফে কেচি জাহাঙ্গীর (৪৫)।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, গত ৯ জুলাই একদল ডাকাত প্রবাসী বাহার মিয়ার বাড়িতে হানা দেয়। তারা কেসি গেইটের তালা কাটার সময় গৃহকর্তা শব্দ শুনে দরজা খোলা মাত্রই ডাকাতদল আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে গৃহকর্তাকে জিম্মি করে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। তারপর ডাকাতদল ঘরের সব সদস্যকে হাতপা ও মুখ বেঁধে ফেলে এবং বাহার মিয়ার নাতনিকে জিম্মি করে আলমারিতে রক্ষিত স্বর্ণালংকার মোবাইল ও নগদ টাকাসহ মোট ১২ লাখ ৪৭ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার তদন্তে জানা যায়
আন্তঃজেলা সংঘবদ্ধ ডাকাত সর্দার লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের চিহ্নিত ডাকাত মহসিন ও চাটখিলের জাহাঙ্গীর ডাকাতের নেতৃত্বে ডাকাতি সংঘটিত হয়। লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী জেলায় অভিযান ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি আধুনিক বিদেশী পিস্তল, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, কেসি গেইট কাটার যন্ত্র, নগদ ৪ হাজার ৯৫০ টাকা ও দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
শহীদুল ইসলাম বলেন, তদন্তে আমরা জেনেছি ডাকাত জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ইমরান হোসেন সুজন ওরফে খালাশি সুজনের নোয়াখালী জেলা কারাগারে পরিচয়ের সূত্রে ডাকাতদলের সদস্যরা ডাকাতির পূর্বে হাজীপুর গ্রামের সুজনের বাসায় আশ্রয় নেয় এবং ডাকাতি করে লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে চলে যায়।
খালাশি সুজনের সংবাদে ডাকাত মহসিন, শহীদ কবিরাজ ও কেসি জাহাঙ্গীরের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে তারা প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি করে।
শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, ডাকাত আরিফ, জুয়েল ও সুজন ঘটনার সঙ্গে নিজেদের ও অন্যান্যদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত অন্যান্য মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান রাজিব, সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম, বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জায়েদুল হক রনিসহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/আরকে