পটুয়াখালীতে বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন জেলার কাঁকড়া চাষিরা। উপকূলীয় এলাকাগুলোতে লোনাপানি ও আবহাওয়া কাঁকড়া চাষের উপযোগী হওয়ায় নতুন সম্ভাবনার দাড় খুলেছে। দিন দিন বাড়ছে কাঁকড়া চাষের খামার।

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ, কলাপাড়ার মহিপুর এলাকার চরের চাষিরা বাণিজ্যিক ভাবে কাঁকড়া চাষ করছেন। এই কাঁকড়া বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। সরকারিভাবে কাঁকড়া চাষিদের সাহায্য-সহযোগিতা ও পরামর্শ দিলে কাঁকড়া চাষ আরও বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদী ও সমুদ্র থেকে কাঁকড়া শিকারিরা অপরিপক্ব কাঁকড়া শিকার করে নিয়ে আসেন। সেই কাঁকড়া ছোট ছোট ঘেরে চাষ করছে চাষিরা। কাঁকড়া পরিচর্যা করে পরিপক্ব করে বাজারে বিক্রির উপযুক্ত করতে হয়। পরিপক্ব কাঁকড়া স্থানীয় পাইকারদের কাছে সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি করে থাকেন চাষিরা। কাঁকড়া চাষে ঝুঁকি কম লাভ বেশি হওয়ায় আগ্রহের জন্ম দিয়েছে এখানকার চাষিদের। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া কাঁকড়া তুলে এনে বড় করা হয় বলে এখানকার কাঁকড়া দেশবিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।

কাঁকড়া চাষি শ্যামল কান্তি বলেন, কাঁকড়া চাষে ঝুঁকি কম লাভ বেশি হয়ে থাকে, বিভিন্ন স্থানের ছেলেদের কাছ থেকে অপরিপক্ব কাঁকড়া সংগ্রহ করে সাইজ অনুসারে বিক্রয় করে থাকি। তবে আমাদের স্বল্প মূলধন থাকায় বেশি লাভ হয় না। সরকার যদি আমাদের এই কাঁকড়া চাষে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে আমরা অনেক বেশি লাভবান হতে পারব।

আরেক কাঁকড়া চাষি নির্মল সেন বলেন, বাজার থেকে ছোট ও গুড়া মাছ কিনে কাঁকড়াকে খাওয়ানো হয়। ৪১ দিন পরে ঐ কাঁকড়াগুলো প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের হয়। বারো মাস চলে কাঁকড়ার ব্যবসা। প্রতি দেড় মাসে ৫০ হাজার টাকা মূলধনে ১ লাখের বেশি টাকা আসে বলে তিনি জানান। পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন মোকামে প্রতিকেজি কাঁকড়া বিক্রি হয় ৭০০ থেকে ১২০০ টাকায়।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলে চাষের কাঁকড়া থেকে প্রাকৃতিক কাঁকড়া বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে। চাষিদের বর্তমানে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার মতো প্রকল্প নেই। কিন্তু আশার খবর পটুয়াখালীর কাঁকড়া স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশের বাজারেও পৌঁছে গেছে। সমুদ্রের মোহনা থেকে শতশত নৌকা থেকে কাঁকড়া আহরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর ১০ কোটি টাকার কাঁকড়া পটুয়াখালী থেকে চীন, থাইল্যান্ড, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, হংকং, তাইওয়ান ও আরব আমিরাতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।

মাহমুদ হাসান রায়হান/এএএ