বিএনপিকে পা ভাঙা বাঘ এবং খাঁচায় বন্দী সিংহের সঙ্গে তুলনা করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, বিএনপি ২০১৩-১৫ সালের মতো দেশে আর তাণ্ডব চালাতে পারবে না। বিএনপি এখন পা ভাঙা বাঘ আর খাঁচায় বন্দী সিংহ। জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট ও সমৃদ্ধি স্তব্ধ করতে চাইলে বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এই আওয়ামী লীগ এখন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। তাই সাবধান।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) রাতে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রংপুরে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে এই বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচির মধ্যে সংসদ ভেঙে দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। সংসদ ভেঙে দেওয়া মানে সাংবিধানিক সংকট তৈরি। বিএনপি সাংবিধানিক সংকট তৈরি করতে চায়। তারা এর মাধ্যমে দেশে বিশেষ ধরনের সরকার কায়েম করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও জনগণ এটি হতে দেবে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, দিনাজপুরে বিএনপির মহাসচিব ঘোষণা দিয়েছেন তারা নাকি আর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেবে না। তারা এখন অশান্তির কর্মসূচি দেবেন। তারা আবারও জ্বালাও-পোড়াওয়ের আন্দোলন করতে চায়। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তারা আমাদের হুমকি দিতে চায়। তাদের হুমকি ইতিপূর্বে সাগর আর গরুর হাটে মারা গেছে। বিএনপিকে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলে আমরা আর বসে থাকব না। আমরাও দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২ আগস্ট রংপুর জিলা স্কুলে প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষ্যে রংপুর বিভাগীয় সমাবেশকে সফল করতে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে প্রচারণা চালাতে হবে। আমরা রংপুরের সমাবেশকে জনসমুদ্রে রূপান্তরিত করতে চাই। এই সমাবেশে নেতাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আগামীতে কারা দলে পদ পাবেন, কারা নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন তা নির্ভর করবে। তাই সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় জনসমাবেশকে সফল করতে হবে।

আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, সরকার দলীয় হুইপ ইকবালুর রহিম, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমি, সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, মাহবুবা আরা বেগম গিনি প্রমুখ।

এছাড়া আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ইদ্রিস আলী, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদত হোসেন বকুল, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মাজেদ আলী বাবুল, জয়নাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, সাবেক সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলা, উপজেলা, পৌরসভার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

এর আগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ২ আগস্ট রংপুর বিভাগের জনসভা হবে সর্ববৃহৎ জনসভা। সেই জনসভা থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী সভা শুরু হবে। সেই জনসভাকে সমৃদ্ধ আর বিপুল জনগণের উপস্থিতি নিশ্চিতে রংপুর বিভাগের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মুখিয়ে আছেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ