জামালপুর জেলা মহিলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা আক্তার সোমা অগ্রণী ব্যাংকে থেকে নিয়ে যাওয়া ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন।

এর আগে অগ্রণী ব্যাংকে ১২ হাজার টাকা খুচরা করতে গিয়ে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ভুলে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা দিয়ে দেন সোমাকে। পরে তিনি সেই টাকা নিয়ে চুপচাপ চলে যান। 

এই ঘটনাটি রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে জেলা জুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

এ ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফারহানা সোমা গত ১৯ জুলাই বেলা ১২টায় শহরের তমালতলায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় যান। ১২ হাজার টাকা (প্রতিটি এক হাজার টাকার নোট) খুচরা করতে যান তিনি। ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ভুলবশত তার সামনে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা রাখেন। বিষয়টি বোঝার পরেও পুরো টাকা নিয়ে চুপচাপ ব্যাংক থেকে চলে আসেন সোমা।

তবে এ ঘটনা নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোন অভিযোগ নেই বলছেন বলে জানান তারা।

জামালপুরে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই দুপুরের দিকে ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে গিয়ে ১ হাজার টাকার ১২টি নোট খুচরা করেন সোমা। পরে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ভুল করে তার সামনে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা দিলে তিনি নিয়ে চলে আসেন। পরে ওই দিন বিকেলে ব্যাংকের ক্যাশে টাকার হিসাব না মিললে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সোমাকে শনাক্ত করেন।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সোমাকে মোবাইলে কল করেন। এ সময় সোমা টাকা দিতে গড়িমসি শুরু করেন। পরে সেই দিন রাতেই ব্যাংকের লোক মারফত ৮৮ হাজার টাকা ফেরত পাঠান ফারহানা সোমা।

জেলা যুব মহিলা লীগের কয়েকজন নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯ জুলাই বিকেলে দলীয় একটি অনুষ্ঠান শেষে কর্মীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অবস্থান করেন। এরপর ফারহানা সোমা একজন নেত্রীকে নিয়ে তার কাচারিপাড়ার বাসায় যান। সেখানে টাকার একটি ব্যাগ সেই নেত্রীকে দেন এবং কর্মীদের যাতায়াত ভাড়া দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

সেই ব্যাগ নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এসে কর্মীদের টাকা বিতরণ করতে থাকেন নেত্রীরা। এরপর ৩২ হাজার টাকা দেওয়া শেষে ব্যাগে অবশিষ্ট ১ লাখ টাকা থেকে যায়। এমন সময়ই ব্যাংক থেকে ফোন পান ফারহানা সোমা। পরে ওই দিন রাতেই তিনি ৮৮ হাজার টাকা ব্যাংকে পাঠিয়ে দেন। বাকি ৩২ হাজার টাকা ফেরত না দিতে চাইলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকে জানালে গতকাল রোববার ৩২ হাজার টাকাও ফেরত দেন।

এসব বিষয়ে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফারহানা সোমার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে গতকাল রোববার গণমাধ্যমে কর্মীদের তিনি বলেন, যে টাকা নেওয়া হয়েছে সেটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।

জামালপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ ঘটনা নিয়ে আমি কোথাও জানি না কিছু দেখিও নি।

তবে এসব ঘটনায় নিয়ে জামালপুর অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনা মিথ্যা, এটি নিয়ে আমাদের কোনো ধরনের অভিযোগ নেই।

রকিব হাসান নয়ন/এএএ