লাঞ্ছনার শিকার দুই সাংবাদিক

মেহেরপুরে সাবেক পৌর মেয়রের ক্লিনিকের ছবি তোলায় ক্লিনিক মালিকের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন দুই সাংবাদিক। এ সময় সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় ক্লিনিক মালিকের ক্যাডার বাহিনীরা।

লাঞ্চিত সাংবাদিকরা হলেন, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার মেহেরপুর প্রতিনিধি মাসুদ রানা ও দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এ সিদ্দিকী শাহীন।

এছাড়াও দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার মেহেরপুর প্রতিনিধি ও দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক ইয়াদুল মোমিনকে মোবাইলে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়ার হুমকি দেন ক্লিনিক মালিক সাবেক মেয়র মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে এমন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মেহেরপুরের সকল সাংবাদিক। এঘটনায় ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে।

জানা গেছে, মেহেরপুর শহরের কাশারিপাড়াস্থ মায়ের হাঁসি ক্লিনিকের প্রধান ফটকের সাইনবোর্ড এবং ডাক্তারদের পরিচয় সংবলিত ইলেক্ট্রিক ব্যানারের ছবি তোলেন সাংবাদিক এ সিদ্দিকী শাহিন ও মাসুদ রেজা। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ক্লিনিকের মালিক মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু ও তার ছেলে সাফিম। কেড়ে নেওয়া হয় সাংবাদিক এ সিদ্দিকী শাহিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। সাংবাদিকদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি ও শার্টের কলার ধরে ক্লিনিকের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে অন্যান্য সহকর্মীরা ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। পরে পুলিশ এসে সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন।

দৈনিক জবাবদিহির সাংবাদিক এ সিদ্দিকী শাহিন বলেন, আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার পরেই মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু এসে আমার হাত থেকে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেন। পরে আমার কলার ধরে রাস্তা থেকে তার ক্লিনিকের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আমার সহকর্মিরা এসে তার কাছ থেকে আমাকে মুক্ত করেন। 

দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মাসুদ রানা বলেন, ক্লিনিক মালিক মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন সেটা কোনো সভ্য মানুষ করতে পারেনা। 

এ ব্যাপারে মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব চান্দু বলেন, আমি খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হলে ক্লিনিক মালিক মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু তার পূর্ব অভ্যাসমত আমাকেও গালাগালি শুরু করেন। আমি তাকে গালাগালি থেকে নিবৃত করার চেষ্টা করলে আমার উপরেও মারমুখি হন তিনি। পেশাদারিত্বের উপর এই ন্যাক্কার জনক আচরনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এবং অভিযুক্ত ক্লিনিক মালিক মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু ও তার ছেলেসহ ভাড়াটিয়াদের তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনা হোক। 

কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি ও মেহেরপুর প্রতিদিনের সম্পাদক ইয়াদুল মোমিন বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাবেক মেয়র মতু'র যে আস্ফালন, স্বাধীন সাংবাদিকতাকে হুমকীর মুখে ফেলবে। কোনো সাংবাদিক তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি চড়াও হন এবং সাংবাদিককে চাঁদাবাজ আখ্যায়িত করে হুমকি দিয়ে থাকেন। তার সঙ্গে আমার মোবাইলে কথোপকথোনের একটি অডিও রেকর্ডও আছে। যেখানে সে দাঁত ভেঙ্গে দেওয়ার কথা বলেন এবং ৫০ টি চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। এই অডিও রেকর্ডটি ইতোমধ্যে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে ক্লিনিক মালিক পক্ষকে নিবৃত করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি জিডি হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আকতারুজ্জামান/এএএ