ফেনীতে ডেঙ্গুতে প্রথম মৃত্যু, বেড়েছে শনাক্তের হার
মিজানুর রহমান / ফাইল ছবি
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ফেনী সোনাগাজী পৌরসভার হিসাবরক্ষক মিজানুর রহমান মারা গেছেন। জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা এটি। সোমবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মিজান সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের ডা. কবির আহমদের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
সোনাগাজী পৌরসভার কর নির্ধারক কর্মকর্তা নূর নবী আজাদ ঢাকা পোস্টকে জানান, মিজানুর রহমান তিনদিন ধরে প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। জ্বর না কমায় তিনি শনিবার ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওইদিনই তাকে ঢাকা পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রিপোর্টে তার ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। এছাড়াও তার ফুসফুসে সমস্যা ছিল।
এদিকে ফেনীতে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জুলাই মাসে রেকর্ডসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের পর চলতি মাসে এ হার বেড়েছে ৬০ শতাংশের বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে নারী-পুরুষসহ শিশুরাও রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। চলতি মাসে এ নিয়ে ২১৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর আগে জুলাই মাসে মোট ৩৭৩ জনসহ গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত জেলায় মোট ৩৯৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এসময়ে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন মোট ৩১৫ জন। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ।
একই সূত্র আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে ফেনীর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ৬ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ২৯ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৬ জন রোগী জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ৩৬ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মহসেনা আক্তার ঢাকা পোস্টকে জানান, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গতকাল বিকেল পর্যন্ত নতুন করে ৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে ওয়ার্ডে ২৪ জন রোগী ভর্তি আছে। এদের মধ্যে ৫ জন শিশু রয়েছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ আন্তরিক হয়ে কাজ করছি আমরা। প্রত্যেক রোগীকে হাসপাতাল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইন ও অন্যান্য চিকিৎসা উপকরণ দেওয়া হচ্ছে।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. শিহাব উদ্দিন বলেন, জেলায় প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বয়স্কদের পাশাপাশি গত কয়দিন ধরে শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। এইজন্য সচেতনতার বিকল্প নেই। আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ইতোমধ্যে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে ৩০ শয্যার পৃথক ওয়ার্ড করা হয়েছে। রোগীদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য বিভাগ সবসময় সচেষ্ট রয়েছে।
তারেক চৌধুরী/এসএস