চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাপের কামড়ে মৃত্যু বাড়লেও নেই অ্যান্টিভেনম
প্রতীকী ছবি
বর্ষায় সাপের উপদ্রব আতঙ্ক ছড়াচ্ছে গ্রামাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা বাড়লেও এই জেলাতে নেই পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ।
সোমবার (৭ আগস্ট) গোমস্তাপুরে সাপের কামড়ে দুই শিক্ষকের মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে অ্যান্টিভেনমের মজুত বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসক জানান, বিষ নিষ্ক্রিয় করতে পারে এমন উপাদানকে অ্যান্টিভেনম বলা হয়। একজন সাপের কামড়ের পর রোগীকে ১০টি অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দিতে হয়। ১০টি ভায়াল মিলে একটি ডোজ হয়ে থাকে। কার্যকারিতার ওপর ভিত্তি করে অ্যান্টিভেনম দুই রকমের হয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিভেনমকে মনোভ্যালেন্ট ও একাধিক প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিভেনমকে পলিভ্যালেন্ট বলা হয়।
গত সোমবার জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের জিনারপুরে সাপের কামড়ে দুই শিক্ষকের মৃত্যু হয়। রোববার দিবাগত রাতে তাদের দুইজনকে সাপে কামড়ালে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার আগে একজনের মৃত্যু হয়। অপরজনের মৃত্যু হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে।
বিজ্ঞাপন
নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুলতানা পাপিয়া জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি মাত্র অ্যান্টিভেনমের ডোজ ছিল। সাপে কাটা দুই রোগীর একজন আগেই মারা যান। তিনি জীবিত হাসপাতালে এলেও যেকোনো একজনকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া যেত।
এদিকে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অ্যান্টিভেনম নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ বলেন, জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম নেই। সোমবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসনারা বেগম নামে সাপে কাটা এক রোগী এসেছিলেন। কিন্তু সরবরাহ না থাকায় তাকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া যায়নি। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই অ্যান্টিভেনম পাওয়া যাবে। দুই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকতা জানান, চাহিদাপত্র পাঠালেও পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম পাওয়া যায় না।
সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশিদ বলেন, জেলার গোমস্তাপুর, নাচোল ও ভোলাহাট উপজেলায় কোনো অ্যান্টিভেনম নেই। জেলা হাসপাতালে তিন ডোজ ও শিবগঞ্জে মাত্র এক ডোজ আছে। অ্যান্টিভেনমগুলো বিদেশ থেকে আসে, ফলে আসতেও দেরি হয়। আশা করা হচ্ছে, আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে জেলা ও উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেমন সরবরাহ করা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম/আরকে