যশোরের বেনাপোলে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে রাস্তায় ফেলে যাওয়া দেড় বছরের এক শিশুকে অবশেষে পুলিশ উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে। শনিবার (৩ এপ্রিল) বেলা ১টার সময় বেনাপোল পোর্ট থানার পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শিশুটিকে তার বাবার হতে তুলে দেয়।

এর আগে শুক্রবার (২ এপ্রিল) শিশুটির মা মুন্নি বেগম তাকে বেনাপোল বাজারের একটি চায়ের দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।

পুলিশ ও শিশুর প্রতিবেশীরা জানান, বাগেরহাটের পিন্টু শেখের মেয়ে মুন্নির সঙ্গে বিয়ে হয় নড়াইলের কালু শেখের। তবে বর্তমানে বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামে তারা বসবাস করেন। পিন্টু শেখ পেশায় ফুটপাতের শিঙাড়া বিক্রেতা। তাদের আট বছরের সংসারে জন্ম নেয় এক ছেলে, এক মেয়ে। পরকীয়ার জেরে স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকেন মুন্নি। তিনি কখনো থাকেন ভারতে আবার কখনো যেখানে-সেখানে।

শুক্রবার বিকেলে বেনাপোল বাজারে তোফাজ্জেল হোসেন নামের এক চায়ের দোকানের সামনে মুন্নি তার দেড় বছরের শিশু আলিফ হাসানকে দাঁড় করিয়ে রেখে পালিয়ে যান। শিশুটি বেশ কিছু সময় পর কান্নাকাটি শুরু করলে দোকানদার তার মাকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করলে তার বাবা থানায় এসে শিশুটিকে নিয়ে যান।

শিশুটির প্রতিবেশী রাজ মহন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুকে লালন-পালন করতে না পারলে শিশুর বাবার হাতে তুলে দিতে পারতেন। কিন্তু রাস্তায় ছেড়ে যাওয়ায় যেকোনো বিপদ ঘটতে পারত। এমন আচরণ মায়ের কাছ থেকে আমরা আশা করি না।

এ বিষয়ে শিশুর বাবা কালু মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) রাতে তার স্ত্রী তাকে ফোন করে ‘ছেলে আলিফকে বেনাপোল বাজারে এক চায়ের দোকানের পাশে রেখে দিয়েছি। পারলে খুঁজে নিয়ে যাও’ বলেই মোবাইল সংযোগ বন্ধ করে দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট করে কোন জায়গা, তা বলেননি। বেনাপোল বাজারের এসে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ছেলেকে পাননি। অবশেষে পরিচিতজনদের মাধ্যমে ফেসবুকে ছবি কথা শুনে পুলিশের কাছে গিয়ে ছেলেকে ফিরে পায়।

বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহ জানান, শিশুটির মা শিশুটিকে কাছে না রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে ফেলে পালিয়ে যান। শিশুটির বাবা থানায় এসে উপযুক্ত প্রমাণ দিলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

আতাউর রহমান/এনএ