পাবনার ঈশ্বরদীতে বিয়েবাড়িতে দাওয়াত খেয়ে শিশুসহ শতাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের দিয়াড় বাঘইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে আট ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচজনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা নিজ নিজ বাসা ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, পেটব্যথা, বমি, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১০ জন ভর্তি রয়েছেন। এরা সবাই বিয়েবাড়িতে দাওয়াত খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন বলে জানান। অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার পাকশী ইউনিয়নের দিয়াড় বাঘইল গ্রামের মো. আব্দুল্লাহর মেয়ে সুমি খাতুনের (২২) সঙ্গে একই ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামের জিয়াউদ্দিন আফরের ছেলে মাসুদ রানার (২৯) বিয়ে হয়। বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিত অতিথি ১২০ ও বরযাত্রী ৩০ জনসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আপ্যায়ন করানো হয়। পরে রাতে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অনেকে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ও রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন দিয়াড় বাঘইল গ্রামের ওহিদুল মল্লিকের ছেলে সজিব মল্লিক (২৩)। তিনি বলেন, আমি ও আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা দাওয়াত খাওয়ার পর অসুস্থ অনুভব করি। এরপর বমি, পেটব্যথা ও ডায়রিয়া শুরু হয়। বর্তমান আমি ও আমার মা হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমাদের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

একই গ্রামের কাকন হোসেন বলেন, শুক্রবার দাওয়াত খাওয়ার পর শনিবার বিকেল পর্যন্ত অসুস্থ ছিলাম। এখন মোটামুটি সুস্থ। কিন্তু আমার মা খুবই অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রূপপুর গ্রামের রুবেল হোসেন বলেন, আমার চাচাতো শ্যালকের বিয়েতে আমি বরযাত্রী হিসেবে গিয়েছিলাম। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করেছি। শনিবার থেকে হঠাৎ পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তামান্না আশরাফী বলেন, দিয়াড় বাঘইল ও রূপপুর গ্রামের অনেকেই পেটব্যথা, বমি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত দু-দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বিয়েবাড়িতে খাবার খেয়ে নাকি অন্য কোনো কারণে তারা অসুস্থ হয়েছেন তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে দাওয়াত খাওয়ার বিষয়টি অনেকেই বলেছেন।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবন্দ সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিয়ে বাড়ির খাবার খেয়ে কিছু মানুষ অসুস্থ হয়েছে। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে এটার জন্য কনের পরিবার দুঃখ প্রকাশ করেছে। ভুক্তভোগীরা বলছে রান্না করা খাবারে হয়ত কোনো সমস্যা ছিল। এটার জন্য অবশ্য কারও কোনো অভিযোগ নেই।

রাকিব হাসনাত/এএএ