সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। সরাইল উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামে চতুর্থ জানাযা শেষে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে পারিবারিক করবস্থানে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে বিকেলে সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ মাগরিব অরুয়াইল আব্দুস ছাত্তার ডিগ্রি কলেজ মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে মরদেহটি তার নিজ গ্রাম পরমানন্দপুর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চতুর্থ জানাজা শেষে রাত ৯টার দিকে তাকে পারিবারিক করবস্থানে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়। তার আগে জাতীয় সংসদ ভবনে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। 

সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার জানাজায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ ভূঞা ও রহিমা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দীর্ঘদিন সভাপতি পদে ছিলেন।

উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ও জুনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী হিসেবে তিনি আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। 

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা আবারো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে উপনির্বাচন তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন।

বাহাদুর আলম/আরএআর