‘ভুয়া জন্ম নিবন্ধন করে সন্তানকে সারাজীবন মিথ্যার মধ্যে রাখবেন না’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেছেন, নবজাতকের প্রথম উপহার হোক সঠিক জন্মনিবন্ধন। ভুয়া তথ্যে জন্ম নিবন্ধন করে সন্তানকে সারাজীবন মিথ্যার মধ্যে রাখবেন না। ভাগ্যে যা আছে তাই হবে। বয়স কমিয়ে-বাড়িয়ে খুব বেশি সুবিধা পাওয়া যায় না।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করতে হবে। তাই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নোয়াখালী জেলাকেও এগিয়ে যেতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার ৮০ শতাংশ মানুষের জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন। সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে আরেকটু সচেতন হই তাহলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সহজ হবে।
কোর্ট ম্যারেজের কোনো আইনি ভিত্তি নেই উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, আইনে কোর্ট ম্যারেজ বলে কোনো বিধান নেই এবং এর কোনো ভিত্তিও নেই। এটি একটি লোকমুখে প্রচলিত শব্দ। বাল্যবিয়ের নামে যারা কোর্ট ম্যারেজ করছেন বিচ্ছেদ হলে তারা আইনি সহযোগিতা পাবেন না। যারা বাল্যবিবাহে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, জনসাধারণকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং নিবন্ধন কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি, সচিব, গ্রাম পুলিশ ও উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। সনদ ছাড়া স্কুলের ভর্তি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, শিশু শ্রম প্রতিরোধ, বাল্য বিয়ে রোধসহ সকল ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন। তাই যথাসময়ে নিবন্ধন কাজ সম্পন্ন করতে প্রশাসনিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখা হবে। সময়মতো জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কাজ সমাধান করতে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও সচিব, ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা, গ্রাম পুলিশ-সবাইকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
আরও পড়ুন
‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করি, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কে এইচ তাসফিকুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আখিনূর জাহান নীলা, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় নোয়াখালীর উপ-পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাঈমা নুসরাত জাবীন, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান চৌধুরী, নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত, অশ্বদিয়া ইউনিয়নের চেয়ার গোলাম হোসেন বাবলু, নোয়াখালী ইউনিয়নের সচিব মো. সহিদুল ইসলাম সহিদ প্রমুখ।
এর আগে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/এএএ