সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে সালিশি বৈঠকে ডেকে এনে মারপিট ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ আকন্দের লোকজন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার (৯ অক্টোবর) রাতে হযরত আলী নামে এক ব্যক্তি বাদি হয়ে কামারখন্দ থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় মাস খানিক আগে উপজেলার রসুলপুর বাজারে কয়েলগাতী গ্রামের সঙ্গে রসুলপুর গ্রামের কয়েকজন যুবকের হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির বিষয় নিয়ে রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ আকন্দ তার বাঁশতলা বাজারের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে মীমাংসা করার জন্য ডাকেন।

হাতাহাতির বিষয়ে মীমাংসার জন্য রসুলপুর ও কয়েলগাতী গ্রামের যুবক ও মুরুব্বিরা সেখানে উপস্থিত হন। সে সময় আব্দুর রশিদ আকন্দের ছেলে লিটন আকন্দ ও তার লোকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সালিশি বৈঠকের এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ আকন্দ হঠাৎ করে অফিসকক্ষ থেকে বের হয়ে যান। সেই সুযোগে চেয়ারম্যানের ছেলে লিটন আকন্দের নির্দেশে কয়েকজন যুবক ধারালো ছুঁড়ি, লোহার রড, কাঠের বটম, বাঁশের লাঠি দিয়ে শহিদুল ও শাহাদাৎ হোসেনকে মারপিট শুরু করেন। মারপিট ঠেকাতে গেলে হযরত আলী ও সোহেল রানাকেও মারধর করেন এবং শাহাদাৎ হোসেনের পকেটে থাকা ৩০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়।

এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় শাহাদাৎ হোসেন ও শহিদুল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মামলার বাদী হযরত আলীর ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শহিদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের ও কয়েলগাতীর লোকজন আমাদের ইট ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে। আমি ও আমার ভাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আমাদের কাছে থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার এক নম্বর আসামি মো. লিটন আকন্দের বাবা রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশিদ আকন্দ ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটা মারামারি বিষয় সমাধান করার জন্যই তাদেরকে ডাকা হয়েছিল। তারা আসার পরে বসে সেটার প্রায় সমাধানও হয়ে গিয়েছিল। এরপরে আমি সিরাজগঞ্জে এমপি সাহেবের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে চলে যাই। পরে এখানে নাকি একটু মারামারি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমার ছেলেকে যে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে সে মারামারির মধ্যে ছিলই না। বরং সে দুই পক্ষের মারামারিকে থামিয়ে দিয়েছে তারপরেও তাকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও সজীব নামে যে ছেলেকে আসামি করা হয়েছে সে আমার সঙ্গে তখন এমপির বাড়িতে ছিল। তবে ছোট্ট একটি হাতাহাতির ঘটনাকে তারা বড় করে থানায় মামলা দায়ের করেছে।

এ ব্যাপারে কামারখন্দ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, হযরত আলী নামের একজন বাদী হয়ে ৭ জনের নামে মামলা করেছেন। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।

শুভ কুমার ঘোষ/এএএ