মা ইলিশ রক্ষায় নিরাপদ প্রজননের জন্য ইলিশ ধরা, পরিবহন, বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময়ের ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাছের বাজার সরগরম রেখেছেন উপকূলের মৎস্য চাষিরা ও ব্যবসায়ীরা। সমুদ্র ও নদী থেকে কোন মাছ না আসায় বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জাতের চাষের মাছ। 

শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে কুয়াকাটার মাছ বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে কোনো সামুদ্রিক মাছ না থাকায় বিভিন্ন চাষ করা মাছের দখলে রয়েছে বাজার। এর মধ্যে ক্রেতাদের সর্বোচ্চ চাহিদা পূরণ করেছে পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছ। এছাড়া বাজারে রয়েছে রুই, কাৎলা, পুঁটি, কোরাল, মৃগেলসহ নানা প্রজাতির মাছ।

কুয়াকাটার মতস্য মো. ইদ্রিস গাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সারা বছরই প্রতিদিন সকালে আমরা কমবেশি মাছ বিক্রি করে থাকি। তবে বছরে দুইবার সমুদ্রে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। সে সময় মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করি আমরা। মাছের খাবারের অতিরিক্ত দাম হওয়ায় আগের চেয়ে মাছের দামও বেড়েছে কিছুটা। তবে প্রতিদিন ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করছি উপজেলার বাজার গুলোতে।

কুয়াকাটা মাছ বাজারে মাছ কিনতে আসা তরিকুল ইসলাম সম্রাট ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সমুদ্রের পাড়ের মানুষ, সামুদ্রিক মাছ খেতেই বেশি পছন্দ করি কিন্তু সমুদ্রে অবরোধ চলাকালীন সময় সেটা সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয়ে চাষের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনে খেতে হয় আমাদের। বাজারে কোন সামুদ্রিক মাছ না থাকায় দাম একটু বেশি নিচ্ছে বিক্রেতারা।

মাছ বিক্রেতা বশির গাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন,আমরা সারা বছর সমুদ্র ও নদীর মাছ বিক্রি করে থাকি। পাশাপাশি চাষের মাছও বিক্রি করি কিন্তু সেটা তুলনামূলক কম। তবে পাঙ্গাশ মাছ কেজি প্রতি ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, রুইমাছ ৩৫০ টাকা, কাতলা ৩০০ টাকায় বিক্রি করছি। বছরে দুইবার সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে চাষের মাছের উপরেই নির্ভরশীল আমাদের মাছ বাজারগুলো। 

এ বিষয় কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামুদ্রিক নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে উপজেলার বাজারগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির চাষের মাছ বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার মৎস্য চাষিরাও দিনদিন লাভবান হচ্ছে এ পেশায়। মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি। পুরো উপজেলা জুড়ে এ পেশায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকছে মৎস্য চাষিরা।

এসএম আলমাস/আরকে