মরদেহ ঘিরে স্বজনদের আহাজারি

বরিশালে স্থগিত হওয়া নির্বাচনের সূত্র ধরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন। রোববার (১১ এপ্রিল) ভোরে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উলানিয়া সুলতানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন-মো.সাইফুল সর্দার (৩০)ও সাঈদ চৌধুরী (৩৫)। সাঈদ পশ্চিম সুলতানী গ্রামের কাইয়ুম চৌধুরীর ছেলে এবং নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন চৌধুরীর চাচাতো ভাই। 

জানা গেছে, চেয়ারম্যান প্রার্থী রুমা বেগমের সমর্থক তারেক সর্দারের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন চৌধুরীর সমর্থক মিজান মোল্লা, নোমান মোল্লার। সেই সূত্র ধরে শনিবার রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রাতভর উত্তেজনা চলার পর ভোর ৪টার দিকে মিলন চৌধুরীর সমর্থকরা হামলা চালায় রুমা বেগমের সমর্থক সর্দার বাড়িতে।

হামলাকারীরা ওই এলাকার দোকান ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। ওই এলাকার বাসিন্দারা প্রতিরোধ করতে গেলে সংঘর্ষ হয়। এ সময় হামলাকারীদের আঘাতে পার্শ্ববর্তী আশা গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল সর্দার নিহত হন। এ সময় আহত হন আরও ১৫ জন। আহত সাঈদ চৌধুরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যান।

নিহত সাইফুলের স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, কোনো কারণ ছাড়াই রাতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। তারা আমার স্বামীকে ঘর থেকে নামিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে খুন করে রেখে যায়। আমরা বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কয়েকশ হামলাকারী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাদেরসহ ১০/১২টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।

তিনি আরও বলেন, হামলাকারীরা আমাদের একই এলাকার লোক। তাদের সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল না। কিন্তু নির্বাচনে আমরা মিলন চৌধুরীর পক্ষে ছিলাম না। তিনি ঘাতকদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

দক্ষিণ উলানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন জানান, শেষ রাতে মিলন চৌধুরীর কয়েকশ লোক দেশীয় অস্ত্র সহকারে ওই গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। সম্প্রতি স্থগিত হওয়া উলানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন চৌধুরী জানান, ভোরে আমরা হামলা করিনি। সর্দার বাড়ির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমরা প্রতিহত করতে গিয়ে অনেক লোক আহত হয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভোরে মারা যাওয়া সাইদুল সরদারকে তারা নিজেরা হত্যা করে আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। মিলন চৌধুরী তার ভাই হত্যার বিচার চেয়েছেন। 

পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। সহিংসতা যেন আর না ছড়ায় তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসপি