কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় রাতের আঁধারে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৫০ মণ মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এসব মাছের আনুমানিক মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা বলে দাবি মাছ চাষির। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।

বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের ধনঞ্জয় এলাকার মৎস্যচাষি আব্দুর রাজ্জাকের পুকুরের মাছগুলো মরে ভেসে উঠলে দেখতে পান এলাকাবাসী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রাজ্জাক বেসরকারি একটি চাকরি ছেড়ে মাছ চাষ শুরু করেন।

এক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করছেন রাজ্জাক। মৎস্য খামারটি স্বামী-স্ত্রী মিলে দেখাশুনা করেন এবং এই মাছ চাষ করে পরিবারের ভরণপোষণ চালাতেন তারা। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মৎস্য খামার থেকে রাত তিনটার পর বাড়ি চলে এলে পরদিন সকালে পুকুর পাড়ে গিয়ে মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখে হতবাক হয়ে যান তিনি। তার প্রজেক্টের পুকুরে কার্ফু, গ্লাস কার্প, সরপুঁটি, কাতল, রুই, ব্রিগেড, সিলভার কার্প, শিংসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০ মণ মাছ মারা গেছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা আমার পুকুরে বিষ জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করে পুকুরের সব মাছ মেরে ফেলেছে। সকালে পুকুরে মরা মাছ ভেসে উঠা দেখে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই ক্ষতি করেছে আমার। ঋণের টাকা নিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। দূর্বৃত্তরা আমাকে রাস্তায় নামিয়ে দিলো। আমি রাজারহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। চাই প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করুক।

আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী স্মৃতি বেগম বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে এই প্রজেক্ট করে আসছি। এ আয় থেকে আমাদের সংসার চলে। সন্তানের লেখাপড়ার খরচ দেই। কি এমন শত্রুতা যে রাতে কে বা কারা পুকুরে বিষ জাতীয় গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে পুকুরের মাছগুলো মেরে ফেলেছে। এখন আমাদের কী হবে। যারা পুকুরে বিষ দিয়েছে তাদের বিচার চাই।

প্রতিবেশী আকরাম হোসেন বলেন, মানুষের মধ্যে শত্রুতা দেখেছি। কিন্তু মাছের সঙ্গে শত্রুতা করে এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় প্রথম দেখলাম। কে বা কারা রাতের আঁধারে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে সব মাছ মেরে ফেলেছে। সকালে এসে দেখি পুকুরের মাছগুলো মরে ভেসে আছে। যারা এ কাজ করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

রাজারহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জুয়েল রানা/এমএএস