চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি অব্যাহত রয়েছে। শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুর থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো ভারতীয় ট্রাকে আলু আমদানি হয়েছে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৯টি ভারতীয় ট্রাকে মোট ৫১৮ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে। 

এদিকে, আলু আমদানির পর থেকেই কমতে শুরু করেছে দাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে ৫০-৫২ কেজি দরে বিক্রি হলেও শনিবার দুপুরে জেলার বিভিন্ন বাজারে আলু বিক্রি হয়েছে ৪০-৪২ টাকা কেজি দরে। আমদানি অব্যাহত থাকলে আরও দাম কমবে বলছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। 

শনিবার দুপুরে জেলার সবচেয়ে বড় আলুর আড়ৎ পুরাতন বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৪০-৪২ টাকা কেজি দরে। এখানকার খুচরা বিক্রেতা সামশুল আলম বলেন, একদিনের ব্যবধানে প্রতি বস্তায় আলুর দাম কমেছে ৩০০-৫০০ টাকা। হঠাৎ করেই ভারতীয় আলু আমদানির খবর পেয়ে স্টকে থাকা আলু দাম কমিয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন কোল্ড স্টোরেজে রাখা ব্যবসায়ীরা। 

আলু ক্রেতা স্কুলশিক্ষক আলী আশরাফ বলেন, কয়েকদিন আগেই কেজি প্রতি আলু কিনতে হয়েছে ৬০ টাকা করে। এমন দাম অস্বাভাবিক। সাধারণ মানুষের এই দামে আলু কিনে খাওয়া অনেক কষ্টকর। তাই ভারত থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত যৌক্তিক। এভাবে কয়েকদিন আলু আমদানি অব্যাহত থাকলে এমনিতেই আলুর দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এছাড়াও আলুর বাজার যারা অস্থিতিশীল করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

পাইকারি বিক্রেতা আজম আলী জানান, কয়েকদিন আগে আমরা বেশি দামে কিনছিলাম, তাই বেশি দামে কিনতে হয়েছে ভোক্তাকেও। এখন কম দামে পাচ্ছি, তাই বিক্রিও করছি কম দামে। বরং দাম বেশি থাকলেই ক্রেতারা কম কিনেন। গত কয়েকদিনে ব্যাপকহারে বেচাকেনা কমেছিল। এখন দাম কমতে শুরু করেছে, আবারও অধিকহারে ক্রেতারা আলু কিনবেন।

আড়ৎদার রহমত আলী বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনামসজিদ ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি শুরুর খবর পেয়েই মজুতদাররা ২-৪ টাকা কেজি প্রতি দাম কমিয়েছিল। মাঝে একদিন যাওয়াতেই এক লাফে ৮-১০ টাকা করে দাম কমেছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে আরও দাম কমবে। 

ভারতীয় এক রপ্তানিকারক মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আলু বিক্রি হচ্ছে ১২-১৫ টাকা কেজি দরে। বাংলাদেশে দাম বেড়ে যাওয়ায় সেদেশের আমদানিকারকরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আলু আমদানি করছে। আগামী কয়েকদিনে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আলু রপ্তানি করতে আলুর ট্রাক ভর্তি করা হচ্ছে। 

এদিকে, আলু আমদানিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় স্থলবন্দর কাস্টমস। এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা মেনে রাত পর্যন্ত চলছে খালাস কার্যক্রম। সোনামসজিদ পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মো. মাইনুল ইসলাম জানান, সরকারের আলু আমদানির সিদ্ধান্তের পর বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আলু আসছে। মাঝে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় বন্ধ ছিল। শনিবার আবারও আলু আমদানি শুরু হয়েছে। 

এর আগে দেশে প্রথমবারের মতো গত বৃহস্পতিবার দুটি ট্রাকে আসে ৫২ মেট্রিক টন আলু। সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ২১ জন আমদানিকারক ১৫ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন আলু আমদানির অনুমতি পেয়েছে। 

জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস