যশোরের চৌগাছা উপজেলার টেঙ্গুরপুর গ্রামের আইয়ুব আলী খান ও ইউনুস আলী খান জোড়া হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- টেঙ্গুরপুর গ্রামের আবজেল খানের ছেলে বিপ্লব ওরফে বিপুল ও মুকুল খান। আর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- আবজেল খানের ছেলে বিল্লাল খান ও তার স্ত্রী রূপালী বেগম।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের টেঙ্গুরপুর সর্দার ব্রিকসের বিপরীতে মুকুল হোসেনের চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন ইউনুস আলী খান। কাজের লোক (কামলা) ঠিক করা নিয়ে প্রথমে ইউনুস আলী খানের সঙ্গে দোকানি মুকুলের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় ইউনুসকে মুকুল, বিল্লাল, বিপুল ও রুপালি বেগম মারধর করেন। পরবর্তীতে ইউনুস আলী খান বাড়িতে গিয়ে তার ভাই আইয়ুব ও ভাতিজা আসাদুজ্জামানহ মুকুলের দোকানে এসে প্রতিবাদ করলে মুকুল তার ভাই বিপুল, বিল্লাল ও রুপালি বেগম মিলে ইউনুস ও তার ভাই আইয়ুব এবং আসাদুজ্জামানকে গাছি দা ও বটি দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। এতে ইউনুস, আইয়ুব ও আসাদুজ্জামান গুরুতর জখম হন। এ সময় তাদেরকে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইউনুস আলী খান এবং আইয়ুব আলী খানকে মৃত ঘোষণা করেন। আসাদুজ্জামান খানের মাথায় ও হাতে গুরুতর জখম হয়। এ ঘটনায় আইয়ুব খানের মেয়ে সোনিয়া খান বাদী হয়ে চারজনের নামে মামলা করেন। পরবর্তীতে এ মামলায় এজহারনামীয় চার আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশ।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রূপালী বেগম

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও সাক্ষ্যপ্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক চার আসামির মধ্যে মুকুল খান ও বিপ্লব ওরফে বিপুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে অপর দুই আসামি বিল্লাল খান ও তার স্ত্রী রূপালী বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। এ রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট।

অপরদিকে রায় শুনে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দণ্ডিতদের স্বজনরা। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মুকুল খানের স্ত্রী জলি বেগম বলেন, মিথ্যা সাক্ষীর মাধ্যমে নির্দোষ ব্যক্তিদের সাজা প্রদান করা হয়েছে। আমরা এ রায় মানি না। ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে যাব।

এ্যান্টনি দাস অপু/এমজেইউ