সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে তারা এ মন্তব্য করেন।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনেই হবে। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচাল করার জন্য নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। তাদের বলবো কোনো ষড়যন্ত্র করে, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করে এই সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করা যায়নি। তেমনিভাবে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে সংসদ নির্বাচন ব্যর্থ করা যাবে না। এই নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের আলোয় উদ্ভাসিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী আজকে দেশকে একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। এই বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে আমরা পরিচিত হবো।  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, খুলনার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। আর বিএনপি-জামায়াত খুলনাকে মৃত নগরীতে পরিণত করেছিল। শিল্পনগরী খুলনায় সকল মিল কলকারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল। খুলনার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। তারা খুলনার মানুষকে ভুলে গিয়েছিল। খুলনার মানুষের পেটে লাথি দিয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি অপরাজনীতি। সেই রাজনীতি আমরা কখনোই মেনে নেবো না। আমরা নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করবো।  

বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাতিজা শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুলনার মানুষকে অনেক ভালোবাসে। তার প্রমাণ একটাই এই অঞ্চলের মানুষের জন্য উনি পদ্মা সেতু করে দিয়েছেন। আপনারা জানেন যে এই পদ্মা সেতু নিয়ে কতো ষড়যন্ত্র, আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর কতো ষড়যন্ত্র। কিন্তু তারপরও সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে আপনাদের টাকায় উনি নিজের অর্থায়নে বরিশাল-খুলনার মানুষের জন্য এই সেতু করে দিয়েছেন। যার সুফল আপনারা পাচ্ছেন।  

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন এসে গেছে। আমাদের কাছে ১৯ দফা দাবি আছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাওয়ার কিছু নেই। তবুও তিনি আমাদের মাঝে খালি হাতে আসেননি। তিনি আমাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছেন। আমরা আজকের এই জনসভায় তাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার এ দেশের মানুষের ওপর দুঃশাসন চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর এদেশের মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। খুলনায় মানুষের সঙ্গে উনার আত্মার সম্পর্ক রয়েছে।       

মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে বিকেল ৩টা ১৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সার্কিট হাউস মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সমাবেশে উপস্থিত হন। এরপর সেখানে তিনি ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে হেলিকপ্টারে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সার্কিট হাউসে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।  

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, বাগেরহাট -২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা প্রমুখ।  

মহাসমাবেশ সঞ্চালনা করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল।   

আরএআর