বাবা-ছেলেকে তুলে নিয়ে টাকা দাবির ঘটনা তদন্তের নির্দেশ
বরিশালে বাবা-ছেলেকে তুলে নেওয়ার পর ছেলে আব্দুল্লাহ বিন লাদেনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। বুধবার (২২ নভেম্বর) তাকে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করে হস্তান্তর করা হয়েছে। হস্তান্তরের আগে কাউনিয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রেদওয়ান হোসেন রিয়াদ কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
এসআই রেদওয়ান হোসেন রিয়াদ বাবা-ছেলেকে তুলে নিয়ে টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। টাকা দাবির বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের কমিশনার।
বিজ্ঞাপন
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, মাদক উদ্ধারের স্থান কোতোয়ালি মডেল থানা এলাকা হওয়ায় মামলাটি কোতোয়ালি মডেল থানায় করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে আব্দুল্লাহ বিন লাদেনের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বাবা মোসলেম জোমাদ্দার। তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিনভর আমাকে ও আমার ছেলেকে বেলস পার্কে আটকে রেখে এক লাখ টাকা দাবি করেন এসআই রিয়াদ। পরে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য বলেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমাকে ও আমার ছেলেকে কাউনিয়া থানায় নিয়ে রাখেন। সেখান থেকে আমাকে সাড়ে ৪টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে তুলে চরকাউয়া পাঠিয়ে দেন এবং এসআই রিয়াদ বলেন- যেন ৪০ হাজার টাকা নিয়ে এসে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাই।
তিনি বলেন, দুপুরে আমাদের সন্ধান না পেয়ে স্বজনরা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় আমাদের সন্ধান পান। সেই ঘটনা জানাজানি হলে আমাদের ফাঁসাতে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে আমার ছেলেকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
মোসলেম জোমাদ্দার বলেন, মঙ্গলবার একটি জমি সংক্রান্ত মামলার হাজিরা ছিল আমার ও আমার ছেলের। হাজিরা না দিতে পারলে আমাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হবে। এসআই রিয়াদ প্রতিপক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমাদের অপহরণ করেছিল। শেষে ঘটনা জানাজানি হলে ছেলের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়েছে। এটা হয়রানিমূলক। আমরা এই ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচতে চাই।
শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, মোসলেম জমাদ্দার ও তার ছেলে লাদেন এলাকায় কৃষি কাজ করেন। তারা মাদক ব্যবসায় জড়িত বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয়। এর পেছনে অন্য কিছু থাকতে পারে। তিনি ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করেন।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাতেই কলেজছাত্র লাদেনকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করে এজাহারটি দিয়ে গেছেন এসআই রিয়াদ। মামলাটি কাউনিয়া থানা পুলিশের সদস্য দায়ের করলেও তদন্তভার পড়েছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওপর।
বরিশাল মহানগর পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় বিভিন্ন অভিযোগ আমি শুনেছি। ঘটনা শুনেই উপ-কমিশনারকে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছি। আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর