পটুয়াখালীতে আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালীর চারটি আসনেই সাবেক সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পটুয়াখালী-১ ( সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকী) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে সাবেক চিফ হুইপ ও বর্তমান সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ, পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা ও পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিব্বুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
পটুয়াখালী-১ আসন (সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকী) আসনে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ২৫৭ জন ভোটার রয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ফরম কিনেছিলেন ১৩ জন। সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার মৃত্যুতে এই আসনে উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এতে আওয়ামী লীগ থেকে আফজাল হোসেনকে নমিনেশন দেওয়া হয়। পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩২৪ জন ভোটার রয়েছে। এই আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ১৩ জন। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এই আসনটি। স্বাধীনতার পর থেকে এ আসন ধরে রেখেছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ১৯৭৯ সালে প্রথম বার নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আ.স.ম ফিরোজ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও তাকেই নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। তাকে এই নিয়ে ১০ বার মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন।
বিজ্ঞাপন
পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা ও গলাচিপা) আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার ৩৬৭ জন। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ২১ জন। ১৯৯১ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে এ মাঠ। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন পান তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মাওলা রনি। এরপর ২০১৪ সালে নমিনেশন দেওয়া হয় আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসেনকে। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এস এম শাহজাদা। তিনি তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার ভাগিনা। এবারও তাকেই নমিনেশন দেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী) আসনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯৪ জন। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছিলেন ২০ জন। ২০০১ সাল থেকে টানা তিনবার এই আসনে মনোনয়ন পান কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমান তালুকদার। তবে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন দেওয়া হয় ধুলাসার জালাল উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুহিব্বুর রহমান মুহিবকে। আবারো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গত ১৮ থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত চার দিনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন ৩ হাজার ৩৬২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী। মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে দলটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
মাহমুদ হাসান রায়হান/এএএ