অনির্বাণ ক্লাবের একঝাঁক তরুণ মধ্যরাতে অসহায়দের সাহরির খাবার দেন

মধ্যরাতে অসহায়দের খাবার তুলে দিলেন খুলনার খালিশপুর অনির্বাণ ক্লাবের একঝাঁক তরুণ। পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম দিন বুধবার (১৪ এপ্রিল) সাহরির সময়ে খুলনার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পথচারী, নাইটগার্ড, রাস্তার পাশে থাকা অসহায় মানুষ, রিকশা, ভ্যানগাড়ি ও ইজিবাইক চালকদের খাবার তুলে দেন তারা।

সদস্য মশিউর রহমান জনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনির্বাণ ক্লাবের পক্ষ থেকে করোনাকালীন অসহায় মানুষের মাঝে যথাসাধ্য খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। সাহরি দিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

তিনি আরও বলেন, খুলনা রেল স্টেশন, শিববাড়ি মোড়, নিউ মার্কেটের সামনে, খালিশপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ইজিবাইকে ঘুরে ঘুরে আমরা খাবার বিতরণ করেছি। অসহায় মানুষ খাবার পেয়ে খুব খুশি। যা আমাদের আনন্দিত করেছে।

অনির্বাণ ক্লাবের সাবেক সভাপতি মানিক মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতি বছর রমজানে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। তবে করোনার কারণে এক স্থানে বসিয়ে এবার ইফতার করানোর সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে এবারও মানুষের দ্বারে দ্বারে ইফতার বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই আলোকে এবার একটু ভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়।

মানবতার ফেরওয়ালাদের সঙ্গে ছিলেন কবজি হারানো সেই আরমান হোসেনও

তিনি আরও বলেন, রমজানের প্রথম দিন খেটে খাওয়া, রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা অসহায়দের মাঝে সাহরির খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ক্লাবের সব সদস্য সকাল থেকে আয়োজন করেছেন। রাতে খাবারের প্যাকেট ঘুরে ঘুরে মানুষের মাঝে পৌঁছে দিয়েছে।

তরুণ এই মানবতার ফেরওয়ালাদের সঙ্গে ছিলেন দুই হাতের কবজি হারানো সেই আরমান হোসেনও। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মানুষের পাশে থাকতে পেরে খুব ভালো লাগছে। অনির্বাণ ক্লাবের সদস্য হওয়ার কারণে আজ মানুষের পাশে থাকতে পারছি।

আরমান হোসেন আরও বলেন, মানুষ মানুষের পাশে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। যার যতটুকু আছে সে ততটুকু দিয়ে অন্যের সহযোগিতায় এগিয়ে যাবে।

অনির্বাণ ক্লাবের সভাপতি মশিউর রহমান লিটন বলেন, ক্লাবের নিজস্ব কোনো ফান্ড নেই। কোনো ডোনারও নেই। সদস্যরা নিজ উদ্যোগে যে যেমন সাধ্য তেমন অর্থ দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া রমজান ও ঈদ এলে মানুষের মাঝে ইফতারসামগ্রী, নতুন পোশাক, ঈদসামগ্রী প্রদান করা হয়। আজ ব্যতিক্রম কিছু করা হলো।

তিনি আরও বলেন, মধ্যরাতে ক্লাবের সদস্যরা মানুষের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে খাবার বিতরণ করেছেন। এভাবে মানুষের পাশে থাকা আমাদের মূল লক্ষ্য। সবার সহযোগিতায় ক্লাবের একঝাঁক তরুণ সদস্যরা এভাবে মানুষের পাশে থাকবে সেই প্রত্যাশা করি।

মোহাম্মদ মিলন/এমএসআর