সম্মতি নিয়ে স্বামী হারুন-অর-রশিদের (২৫) হাত-পা গামছা দিয়ে বেঁধেছিলেন নববধূ কারিমা খাতুন (২০)। শেষে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে স্বামীকে হত্যা করেন তিনি। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের বিষহারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হারুন ওই গ্রামের বয়জুল মন্ডলের ছেলে। তার স্ত্রী কারিমা খাতুন উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের ভীমনগর পালশা এলাকার কামাল হোসেনের মেয়ে। পরিবারের সম্মতিতে ১৮ দিন আগে তাদের বিয়ে হয়।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে আদালতে স্বামীর হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কারিমা খাতুন। এর আগে, শ্বশুর বয়জুল মন্ডলের দায়ের করা মামলায় তাকে আদালতে নেয় মোহনপুর থানা পুলিশ।

উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমাজ উদ্দিন খাঁন জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিজ ঘরে শ্বাসরোধে ওই নববধূ স্বামীকে হত্যা করেন। ভোরে সাহরি খেতে শাশুড়ি ডাকাডাকি করলে ব্যাগ গুছিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। পরে ঘরে ঢুকে ছেলের অচেতন দেহ দেখতে পান মা। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে নববধূকে আটকে রাখেন। পরে এ নিয়ে আইনত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।

এদিকে, মোহনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ১৮ দিন আগে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামীকে পছন্দ হয়নি নববধূর। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। এরই জেরে স্বামীকে কৌশলে শ্বাসরোধে হত্যা করেন কারিমা খাতুন। আদালতে বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন তিনি। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

ওসি আরও বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসবাদে ওই নারী স্বীকার করেছেন, বিয়ের পর থেকে স্বামীকে কিছুতেই মানতে পারছিলেন না তিনি। স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ট হতে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে স্বামী তার সঙ্গে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করেন। আপত্তি সত্ত্বেও শেষে হাত ও পা বাঁধার শর্ত দিয়ে রাজি হন নববধূ। সম্মতি নিয়ে পরে গামছা দিয়ে স্বামীর হাত ও পা বেঁধে ফেলেন কারিমা। এক পর্যায়ে গলায় ওড়না ও রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করেন। এতেই মারা যান হারুন। 

ওসি জানান, বুধবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি